• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৪-১০-২০২২, সময়ঃ সকাল ০৯:২০
  • ৮২ বার দেখা হয়েছে

আজ ২৪ অক্টোবর ফুলছড়ি-সাঘাটায় সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ১২ বীর মুক্তিযোদ্ধা 

আজ ২৪ অক্টোবর ফুলছড়ি-সাঘাটায় সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ১২ বীর মুক্তিযোদ্ধা 

ভবতোষ রায় মনা ►

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আজ ২৪ অক্টোবর গাইবান্ধার সাঘাটা-ফুলছড়ি এলাকার এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সাঘাটা উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র বোনারপাড়ার অদূরে ত্রিমোহনী ঘাটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে ৬ ঘন্টাব্যাপী সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ১২ বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারাও ২৭ পাক সেনাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। ওই দিন স্থানীয়দের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাহিত করা হয় দলদলিয়া গ্রামে। শহীদদের গণকবর ও স্মৃতিস্তম্ভটি সারাবছরেই অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকলেও স্থানীয় জনসাধারণের কাছে শুধুই স্মৃতি। 

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গাইবান্ধার ভরতখালী-বোনারপাড়ার পার্শ্ববতী পদুমশহরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বহনকারী রেল ওয়াগনে হামলা, সিংড়িয়া রেল ব্রীজ পাহারায় নিয়োজিত ১২ রাজাকারকে হত্যা, ভরতখালী-গাইবান্ধা সড়কে পাক সেনা কনভয়ের ওপর হামলা এবং বাদিয়াখালী ব্রীজ ধ্বংসের সফল অভিযান পরিচালনা করে ১১নং সেক্টরাধীন রোস্তম আলী খন্দকার কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারা বোনারপাড়া পাক সেনাশিবির আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন।

ফুলছড়ির গলনা থেকে ২২ অক্টোবর গভীর রাতে বোনারপাড়ার ত্রিমোহনী ঘাট এলাকার কয়েকটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। ২৩ অক্টোবর একজন শান্তি কমিটির সদস্য পাক সেনাশিবিরে সেই খবর পৌঁছে দেয়। ২৪ অক্টোবর সূর্যোদয়ের আগেই পাক সেনাদের একটি বিশাল বাহিনী ত্রিমোহনী ঘাট এলাকা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। শুরু হয় সস্মুখযুদ্ধ। সকাল থেকে শুরু হয়ে ৬ ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধে শহীদ হন ১২ বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারাও ২৭ পাক সেনাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। ওই দিন বিকেলে স্থানীয় লোকজন যুদ্ধেেত্র বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে থাকা ১২ বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার করে পার্শ্ববতী দলদলিয়া গ্রামের দু’টি স্থানে সমাহিত করে। 

চারদিকে ধান তে মাঝখানে ৬ বীরমুক্তিযোদ্ধা কবর। এখান থেকে একটু দূরেই আরও ৬ মুক্তিযোদ্ধা ঘুমিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন ফুলছড়ির শহিদুল্লাহ, হাবিবুর রহমান, সাঘাটার আনছার আলী, আ: হাই, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধার আহস্মদ আলী, প্রভাত চন্দ্র, ভরত চন্দ্র, বোঁচারাম দাস, ধনঞ্জয়, গাইবান্ধা সদরের হামিদুল হক মধু, পাবনার আ: হাই এবং হাবিবুর রহমান। ২০০১ সালে স্থানীয় উদ্যোগে এখানে নির্মিত হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। দীর্ঘদিন অযত্ন ও অবহেলায় থাকায় সেটি এখন সংষ্কার করা হচ্ছে।
ততকালীন ১১নং সেক্টরের সহ-সেক্টর কমান্ডার গৌতম চন্দ্র মোদক বলেন, ওই দিন বিকেলে স্থানীয় লোকজন যুদ্ধেেত্র বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে থাকা ১২ বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার করে পার্শ্ববতী দলদলিয়া গ্রামের দু’টি স্থানে সমাহিত করে। দিনটি উপলে আজ দিনব্যাপী স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। 
 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়