ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি ►
গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপ-নির্বাচনে আগামীকাল বুধবার ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর টানা ১৮ দিনের জমজমাট প্রচারণা শেষে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে (ইলেকট্রিক ভোটং মেশিন) ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে নারী-পুরুষসহ ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার এবং সহিংসতা এড়াতে এরই মধ্যে প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। দুই উপজেলার নির্বাচন অফিস থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে ভোট গ্রহনের সরঞ্জামাদী নিয়ে যান ভোট গ্রহনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগের সাথে জাতীয় পাটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে এমনটাই ধারণা করছে ভোটাররা। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দখলে থাকা এ আসনটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে জাতীয় পার্টি। কিন্তু শক্ত অবস্থানে থাকা আওয়ামী লীগ কোন অবস্থাতেই আসনটি ছাড় দিতে রাজি নয়। ভোটের মাঠে নতুন প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের চমক দেখিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ। উপ-নির্বাচনে ৩ জন দলীয় ও ২জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন (নৌকা) জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রনজু (লাঙ্গল), বিকল্পধারা বাংলাদেশের এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম (কূলা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক)।
জাতীয় সংসদের নির্বাচনে এই প্রথম সবগুলো ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোট প্রদান পদ্ধতি নিয়ে ভোটারদের মাঝে নানা শঙ্কা কাজ করলেও ভোটারদের সব ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন ইভিএমের বিষয়ে মাইকিং, পোস্টার ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের সচেতন করাসহ ভোটারদের স্বশরীরে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটদান প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করার কথাও জানিয়েছে।
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব জানান, নির্বাচনে ১৪৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৯৫২ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও এক হাজার ৯০৪ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে একজন কর্মকর্তা সহ ৪ জন পুলিশ, পিসি,এপিসি সহ ১২ জন আনছার ও ভিডিপি দায়িত্বপালন করবেন। এছাড়া নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের ৯টি টিম, ৪ প্লাটুন বিজিবি, ৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১৭জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং এসিল্যান্ড, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ৬টি মোবাইল টিম মাঠে কাজ করবেন।
গত ২৩ জুলাই এই আসনের সাংসদ ও ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে আসনটি শুন্য হয়। নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।