• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৩-১-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৪:৪০

ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত সৈয়দপুরের জনজীবন

ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত সৈয়দপুরের জনজীবন

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি ►

উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সৈয়দপুরে জেঁকে বসেছে শীত। গত কয়েক দিন থেকে ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্যান্য দিনের চেয়ে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারী) বাতাসের গতি বেশী হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ফলে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বিরাজ করছে। 

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে। দুপুরে সুর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপমাত্রা খুবই কম। মৃদু শৈত্য প্রবাহের ফলে নিত্যকার কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো কনকনে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে ফুটপাতে শীতের কাপড় ক্রয়ের জন্য ভিড় জমাচ্ছে। কিন্তু ছিন্নমূল লোকজন অর্থাভাবে গরম কাপড় কিনতে না পেরে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে। 

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ মঙ্গলবার সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খেটে খাওয়া মানুষ ঠান্ডা বেশী হওয়ার কারনে কাজে যেতে পারছেন না। এদিকে, বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত সাত দিনে শীতজনিত রোগে শিশুসহ ৪৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলিমুল বাশার বলেন, শীতের কারণে বর্তমানে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়াও ঠান্ডা বৃদ্ধি পেলে সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান তিনি।

এদিকে কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কম থাকায় ঢাকা থেকে যেমন কোন উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করছেনা। তেমনি অনেক সময় সৈয়দপুরে অবতরণে সমস্যা হচ্ছে। ফলে সকালের দিকের ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরে তাই ঢাকাগামী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছে। একইভাবে সড়ক ও রেলপথে যানবাহন চলাচলেও বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করছে চালকরা। 

গত এক সপ্তাহ নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস টেনটি ৫ ঘন্টা থেকে ৮ ঘন্টা বিলম্বে চলাচল করেছে। রাজশাহী ও খুলনা রুটের ট্রেনগুলোর ক্ষেত্রেও সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। দূরপাল্লার নৈশকোচ বাসগুলোও কুয়াশার কারণে ধীরগতিতে যাতায়াতে জটে পড়েছে। এতে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের অসুরখাই গ্রামের কবিরুল ইসলাম (৬০) জানান, শীত বেশি হওয়ায় অর্থাভাবে গরম কাপড় কিনতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছি। কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের বটের তল এলাকার ট্রাক্টর শ্রমিক মোকছেদ মিয়া জানান, পুরাতন কাপড় কিনে কোন রকমে শীত নিবারনের চেষ্টা করছি। কিন্তু এবার সেগুলোর দামও তুলনামূলক বেশি। 

অতিদরিদ্রের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বিশেষ করে রেলওয়ে স্টেসনের প্লাটফরম ও বাস টার্মিনালে বসবাসকারী ছিন্নমূল মানুষ চরম দূরাবস্থায় রয়েছে। সরকারীভাবে পৌরসভা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোন শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি। ফলে গ্রামাঞ্চলের অসহায় মানুষেরাও দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। 

নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ নিজে ঘুরে ঘুরে সদর উপজেলায় ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর মাঝে কম্বল বিতরণ করলেও সৈয়দপুরে দেয়া হয়নি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল রায়হান বলেন, এখন পর্যন্ত কোন কম্বল বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। পেলে তা  মানুষের মাঝে ক্রমান্বয়ে বিতরন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়