শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর ►
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার সাতপাই উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তার (১৫) ছয় মাস ধরে নিখোঁজ। সে বেঁচে আছে কি মারা গেছে আজও জানতে পারেনি পরিবার। বেঁচে থাকলেও কোথায় আছে, কেমন আছে তাও জানেনা তারা।
জিডি করলেও থানা পুলিশ কোন হদিস দিতে না পারায় অপহরণ মামলা করতে গেলে নেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করার পরও কোন খোঁজ মেলেনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েটির। আসামীদের বিরুদ্ধেও কোন পদপে নেয়নি প্রশাসন। বরং পুলিশ ও আসামীদের প থেকে উল্টো নানা ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এমনই অভিযোগ করেছে অসহায় পরিবারটি।
নিখোঁজ মেয়েটির মা সামিনা বেগম বলেন, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল সকাল ৭ টায় সাদিয়া সাতপাই স্কুল সংলগ্ন জিনিয়াস কোচিং সেন্টারে যায়। দুপুর পেরিয়েও না আসায় আশেপাশে খোঁজ করে না পেয়ে এলাকার লোকজনের তথ্যামতে প্রতিবেশী ফিরোজুল ইসলাম মদনের (৫০) বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করি। কিন্তু তারা টালবাহানা করে। তিনি আরও জানান, মদনের ছেলে মোখলেছুর রহমান চঞ্চল (২০) তার বাবা মায়ের সহযোগীতায় আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে অপহরণ করেছে। তাদের কোন আত্মীয়দের বাসায় লুকিয়ে রেখেছে। সে অনুযায়ী ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানালে তারা ২ দিনের সময় নেয়। এর পরদিন ফিরোজুলের স্ত্রী মোসলেমা (৪২) তার ছেলে চঞ্চল ও আমার মেয়ের খোঁজ করার কথা বলে বাবার বাড়ি যায়। তিনি আর ফিরেননি এবং সাদিয়ার কোন খবরও দেয়নি। ফলে ৭ এপ্রিল সৈয়দপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করি। জিডি নং-৪৩০।
সাদিয়ার বড় ভাই মো. শুভ ইসলাম বলেন, ১০ দিন পেরিয়েও পুলিশও কোন হদিস করতে না পারায় এবং ঘটনার সাথে ফিরোজুল গং জড়িত থাকা নিশ্চিত হওয়ায় অপহরণ মামলা দিতে গেলে থানা নেয়নি। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। সিআইডিকে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিলেও ৬ মাস থেকে কোন অগ্রগতি নাই।
মেয়েটির বাবা শহিদুল ইসলাম আেেপর সাথে বলেন, জানিনা কবে সিআইডি প্রতিবেদন দিবে, আর কতদিনেই বা আমরা মেয়ের খোঁজ পাবো ? আল্লাহই ভালো জানেন অপরাধীদের আদৌ শাস্তি হবে কিনা! এমনিতে আমরা মেয়েকে হারিয়ে চরম দুশ্চিন্তায়।
মামলার ৩নং আসামী চঞ্চলের চাচা ফয়জুল করিম (৪৫) বলেন, তারা কোথায় আছে আমরা জানিনা। কোন যোগাযোগই নাই। বাড়িতে তালা। তবে মেয়েটির পরিবার মামলা তুলে নিলে ছেলে-মেয়েসহ সবাই ফিরে আসবে।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই প্রদীপ ব্যাণার্জীর সাথে মোবাইলে কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় তাঁর মতামত জানা সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় পরিবারটি মেয়ের খোঁজ না পেয়ে চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। তারা দ্রুত এব্যাপারে প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপরে হস্তপে কামনা করেছেন।