দিনাজপুর প্রতিনিধি ►
দিনাজপুর পৌর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডেও লালবাগ বৈশাখীর মোড়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে নবম শ্রেণির ছাত্রী আনজুম বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুর্তুজা আল মুঈদ স্কুল ছাত্রী আনজুম এর গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বিয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। এ সময় কনের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের উপস্থিতি দেখে আনজুম বিয়ে অনুষ্ঠানের আসা আত্মীয়-স্বজন কৌশলে সরে যান।
কনে আনজুম, দিনাজপুর পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের লালবাগ বৈশাখীর মোড়স্ত বাদশা মিয়ার কন্যা ও দিনাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। কনের বাবা বাদশা মিয়া ও মা লিজা বেগম তাদের মেয়েকে বাল্যবিবাহ আর দিবে না এই মর্মে নির্বাহী অফিসার এর সামনে মুচলেকা দিয়ে অঙ্গীকার করেন। মুচলেকায় উল্লেখ করেন যে, আমাদের মেয়ের বিবাহযোগ্য বয়স বা ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিব না। এটাও প্রতিজ্ঞা করে যে এর মধ্যে যদি তার মেয়ে আনজুমকে বিয়ে দেয় তাহলে বাংলাদেশের ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আইনের আওতায় এনে তাদেরকে শাস্তিযোগ্য প্রদান করা যাবে বলে অঙ্গীকার করেন।
আনজুম বিয়ে অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজছে, বর আসবে গেট সুসজ্জিত করা হয়েছে। রান্নাবান্নার কাজও শেষ আত্মীয়-স্বজনসহ পাড়া-প্রতিবেশীরাও বিয়ের অনুষ্ঠানে চলে এসেছে। চলছে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান এ যেন এক পূর্ণাঙ্গ বিয়ে বাড়ী আয়োজন পুরোদমে চলছে। এমন সময় দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার পুলিশের একটি দল ও বেশ কিছু সংবাদকর্মী বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হলে কনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাকে খুঁজে বের করে আনার পর কনের মা ও কনের বাবাসহ ইউএনওর সামনে উপস্থিত করা হয় পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মাপ্রার্থনা করেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে স্থানীয় কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থেকে কনে আনজুম কনের বাবা বাদশা মিয়া ও মা লিজা বেগম এই অঙ্গীকার নামায় স্বার করেন। প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়েকে বিয়ে দিব না।
পরে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার আলী স্বপনের জিম্মায় কনে আনজুমকে দেওয়া হয়। বর আহাদ হাসান রুবেল দিনাজপুর সদরের চাউলিয়াপট্টির আব্দুস সালামের বিদেশ ফেরত ছেলে। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর এটাও অঙ্গীকার করেন বর রুবেল, বরের বাবা আব্দুস সালাম এবং বরের মাকে শুক্রবার দিনাজপুর নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে গিয়ে বিয়ে আর করাবে না এমন লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে আসবেন।