• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৮-১১-২০২২, সময়ঃ দুপুর ০২:৫১

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে বিপদে হোটেল ব্যবসায়িরা

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে বিপদে হোটেল ব্যবসায়িরা

ফুলবাড়ী প্রতিনিধি ►

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরশহরের বাজার এলাকার প্রায় ৫০ ধছর ধরে ডুঙ্গি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট নামের খাবার হোটেল রয়েছে। এই হোটেলের আয় দিয়েই চলছে হোটেল শ্রমিক, রাঁধুনীসহ ১৪ জনের সংসার। তবে চাল, আটা, ভোজ্যতেলসহ খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে ব্যবসা লাটে ওঠার উপক্রম হয়েছে হোটলটির। 

হোটেলের স্বত্বাধিকারী উজ্জ্বল কুমার মোহন্ত বলেন, তাদের হোটেলে ৫০ বছর ধরে সকাল ও বিকেলে নাস্তার সঙ্গে ডাল ও ভাজি ফ্রি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন ডালের জন্য টাকা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও ক্রেতাদের আপত্তির কারণে নিতে পারছেন না। ফলে বিনামূল্যেই ডাল ও ভাজি দিতে হচ্ছে। এতে করে লাভের চেয়ে লোকসানের মুখে পড়েছেন হোটেলটি। এতে পুঁজি বাড়াতে হলেও মুনাফা কমেছে। শুধু ডুঙ্গি হোটেলেই নয়, উপজেলার কমবেশি পাঁচ শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি হোটেল ব্যবসায়িরা বিপদে রয়েছেন। অনেকে বড় পূঁজি না পেয়ে ছোট পরিসরে কৌশলে ব্যবসা চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। 

স্থানীয় পাল হোটেল স্বত্বাধিকারী খোকন পাল ও আসোয়াত হোটেলের স্বত্বাধিকারী আসোয়াত আলী বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে হোটেল ব্যবসানিভর জীবন জীবিকার ছেদ পড়েছে। গ্রাহক কমে যাওয়ার পাশাপাশি হোটেল ব্যবসায় মন্দাবস্থা চলছে। চলতি নভেম্বর মাসে খাদ্য সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। 

ব্যবসায়িরা জানান, জানুয়ারিতে ৩৭ কেজি ওজনের আটার বস্তা ৯০০ থেকে ৯২৫ টাকা ছিল। এখন সেই আটা দুই হাজার ৫৫০ টাকা। ৯০ টাকা লিটারের ভোজ্যতেল এখন ১৬৫ টাকা, ৮৮ টাকার পাম এখন ১৩৫ টাকা, ৭৫ টাকার চিনি ১০৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে নাজির সাইল ৫৬ টাকা কেজির চাল এখন ৬৮ টাকা, ৬ টাকার ডিম ১০-১২ টাকা, ১২০ টাকা প্রতিমণ খড়ি এখন ২০০ টাকা, ৮৫০ টাকার গ্যাস এখন এক হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় ভোক্তা পর্যায়েও হোটেলের খাবারের দাম বেড়েছে। ডিম ভাজি ১৫ টাকা থেকে বেড়ে ২০ টাকা, ১৫ টাকার প্লেট ভাত এখন ২০ টাকা, ৫ টাকার পরোটা ১০ টাকা, ৫ টাকার দুধ চা এখন এলাকা ভেদে ৭-১০ টাকা, ১০ টাকার ভাজি ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এখন হোটেল খেয়ে পোষায় না বলে জানান ফুলবাড়ী শহরের রাজধানী হোটেলে খেতে আসা আবু সাঈদ, আরমান আলী ও আলী আকবর। তারা বলেন, আগে যে পরিমাণ ভাত-তরকারি দেওয়া হতো, এখন তার চেয়ে কম দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দাম বেড়েছে। 
হোটেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জানুয়ারিতে হোটেল শ্রমিকের মজুরি ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এখন মজুরি দিতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। উপজেলার প্রতিটি হোটেল রেস্টুরেন্টেই গ্রাহক সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ কমেছে। 

প্রসিদ্ধ হোটেল ব্যবসায়ি সম্ভু প্রসাদ বলেন, খাদ্যপণ্যেও দাম বাড়ায় হোটেল চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বেশি পূঁজি খাটিয়ে লভ্যাংম কমছে। এতে পূঁজি হারিয়ে যেতে বসেছে। ইতোমধ্যে অনেক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে পূঁজি সংকটের কারণে।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়