• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৫-১১-২০২২, সময়ঃ দুপুর ০২:২২

শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে শতবর্ষি ফুলবাড়ীর ঐহিত্যবাহী গোলাম মোস্তফা (জি.এম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে শতবর্ষি ফুলবাড়ীর ঐহিত্যবাহী গোলাম মোস্তফা (জি.এম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

ধীমান চন্দ্র সাহা, ফুলবাড়ী  ►

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ঐতিহ্যবাহী গোলাম মোস্তফা (জি.এম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শতবছরেরও অধিক সময় ধরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। 

ফুলবাড়ী পৌরশহরের পশ্চিম গৌরীপাড়া ঢাকা মোড় এলাকার ১০ একর জমির ওপর গাছ-পালার নিবির ছাড়া ঘেরা মনোরম পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত গোলাম মোস্তফা (জি.এম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি শত বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলেছে আপন মহিমায়।

প্রবীণ ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে, ভারতের হুগলি জেলার বাসিন্দা শিক্ষানুরাগী দানশীল ব্যক্তিত্ব এমবিবিএস চিকিৎসক সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। ১৯১৯ সালের পূর্বে ইসলাম প্রচারসহ মানবসেবার ব্রত নিয়ে এ অঞ্চলে আসেন। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষায় আলোকিত করতে ১৯২০ সালে পৌরশহরের পশ্চিম গৌরীপাড়া এলাকায় ১০ একর জমি দান করে গোলাম মোস্তফা হাই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যা পরিবর্তিতে মাদরাসা থেকে সাধারণ শিক্ষার জন্য গোলাম মোস্তফা (জি.এম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নামে রুপান্তরিত হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, এক শতাব্দীতে এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি অনেক কীর্তিমান শিক্ষার্থীর জন্ম দিয়েছে। যারা নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দেশের জন্য কাজ করছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদ্যালয়টিকে খানসেনা অস্থায়ী ক্যাম্প করে বিদ্যালয়ের সমস্ত নথিপত্র পুড়িয়ে দেয়। এজন্য বিদ্যালয়টির অনেক অজানা তথ্য অজানাই রয়ে গেছে। ১৯২০ সালে গোলাম মোস্তফা হাই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও ১৯৫৮ সালে গোলাম মোস্তফা (জিএম) উচ্চ বিদ্যালয়ে রুপান্তরির হয়। শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন শ্রী শরৎ চন্দ্র সরকার। এরপর পর্যায়ক্রমে সাতজন প্রধান শিক্ষকের পদচারণার পর বর্তমানে তোজাম্মেল হক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। 

প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৩৯ জন শিক্ষক-কর্মচারি কর্মরতসহ প্রায় এক হাজার ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়ণ করছে। এছাড়াও ১৯৬০ সালে বিদ্যালয়টি থেকে প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। সে বছরেই এসএসসিতে শিক্ষাবোর্ডে মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেন লন্ডন প্রবাসী দানেশ আহম্মেদ। একই বছরে আব্দুল গফুর নামে অপর শিক্ষার্থীও অষ্টম স্থান অর্জন করেন। কালের সাক্ষী প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এলাকার গর্বিত ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক।  

এদিকে শতবর্ষি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, অধ্যক্ষ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, রাজনীতিক, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, গণমাধ্যমকর্মীসহ গুণী ব্যক্তিত্ব এই বিদ্যালয় থেকেই শিক্ষা জীবন শুরু করেছিলেন। এদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফয়জার রহমান, অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মতিয়ার রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রাহেল রাজিব, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবীর, অধ্যক্ষ প্রফেসর নজমুল হক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রেজাউল আলম, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাবিবুল হক চৌধুরী, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাবলু কুমার সাহা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসকে সাদেক আলী, বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসক আব্দুল্লাহ হেল কাফী প্রমুখ রয়েছেন।

বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, বিদ্যালয়টি ২০২০ সালেই শতবর্ষ পেরিয়েছে। করোনার কারণে শতবর্ষ উদযাপন করা যায়নি। তবে আগামী ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর দুইদিন ব্যাপী বিদ্যালয়টির শতবর্ষ উদযাপন করবেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়