• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৬-১২-২০২২, সময়ঃ সন্ধ্যা ০৬:২৫

শীতে রসনার তৃপ্তি মেটাতে জমে উঠেছে চিতই পিঠার দোকান

শীতে রসনার তৃপ্তি মেটাতে জমে উঠেছে চিতই পিঠার দোকান

শহর প্রতিবেদক 

এখন চলছে বেশির ভাগ মানুষের প্রিয় ঋতু শীতকাল। আর শীত মানেই তো পিঠা-পুলি খাওয়ার দিন। শীতকাল আর পিঠা যেন একই সূত্রে গাঁথা। হালকা শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। শীতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পিঠার সরঞ্জাম নিয়ে বসে যান মৌসুমি পিঠা ব্যবসায়ীরা।

এক সময় ছিল শীতে বাড়িতে বাড়িতে নতুন ধানের পিঠা তৈরি হতো। মা, নানি-দাদির হাতে তৈরি মজার মজার পিঠা খাওয়া ছাড়া শীতকালের কথা চিন্তাই করা যেতো না। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আর মানুষের ব্যস্ততার কারণে এখন আর সেভাবে পিঠা তৈরি হয় না। কোনও কোনও পরিবার এখনও এই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করলেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে আর আগের মতো করে পারছে না। তাই পিঠা খাওয়ার জন্য মানুষকে এখন নির্ভর করতে হয় বিভিন্ন পিঠার দোকানের ওপর। রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা শহরে এমনই চিত্র দেখা যায়।

এবারের শীতে গাইবান্ধা জেলায়ও একই চিত্র দেখা যায়। জেলা শহরের ট্রাফিক মোড়ে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ চিতই পিঠার দোকান। প্রতিদিন বিকেলে এসব দোকানে গরম গরম পিঠার খেতে ভিড় করে মানুষ।

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে-সঙ্গে একদিকে যেমন জেকে ধরে শীত অন্য দিকে তেমনি বাড়ে পিঠা কেনার ধুম। আর তা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। এমন পরিবেশে শীতের পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। অনেকে পরিবার নিয়ে যাচ্ছেন এসব এলাকার পিঠার দোকানে। অনেকে আবার অন লাইনে অর্ডার দিয়ে পরিবারের সঙ্গে বাসায় বসে খাচ্ছেন শীতের পিঠা।

সরেজমিন দেখা যায়, গরম গরম চিতই পিঠা নামছে মাটির চুলা থেকে। ক্রেতারা সারিবদ্ধ হয়ে পিঠা কিনছেন। কেউ নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার চুলার সামনে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন। শীত যতো বাড়ছে পিঠাপুলির দোকানে ভিড়ও ততো বাড়ছে। দোকানগুলোয় পিঠার পাশাপাশি থাকছে হরেক রকম ভর্তা। রসুন-মরিচবাটা, ধনিয়াপাতা বাটা, সর্ষে ভর্তাসহ নানা রকমের ভর্তা। শীতে চিতই পিঠার কদরটা একটু বেশি। কারণ চিতই পিঠা খেতে যেমন মজা এর দামও তেমনি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। আকার অনুযায়ী প্রতিটি পিঠার দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও অভিজাত এলাকায় গড়ে ওঠা পিঠার দোকানে পাওয়া যাচ্ছে পুলি, ভাপা, তেলের পিঠা ও পাটিসাপটাসহ হরেক রকম আইটেম।

গাইবান্ধা শহরের পৌর এলাকার এক পিঠা বিক্রেতা ইমন মিয়া বলেন, 'বছরের এই সময়টা শীতকালীন পিঠার বিক্রি বেশি হয়। বর্তমানে তিনি চিতই ও ভাপা পিঠা তৈরি করছেন। আর চিতই ও ভাপা পিঠা খাওয়ার জন্য থাকছে নারকেল গুড়সহ বাহারি পদের ভর্তা আর এই ব্যবসায় লাভও ভালো পাওয়া যায়।

সেখানে চিতই পিঠা খেতে আসা মুসা নামে এক যুবক জানান, শীতে চুলার পাশে বসে পিঠা খাওয়ার যে ছবি আমাদের চোখের ভেসে ওঠে, নগর জীবনে তার দেখা পাওয়া সম্ভব নয়। রাস্তার পাশে পিঠা বিক্রি হওয়ার কারণে পিঠা খাওয়ার একটু সুযোগ পাওয়া যায়।

পিঠা বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, এবার শীত বেশি হওয়ায় প্রচুর পিঠা বিক্রি হচ্ছে। বিকাল পাঁচটা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি হয়। রাতে পিঠার চাহিদা বেশি থাকে। এবার পিঠা বিক্রিও অনেক বেশি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পিঠা তৈরির খরচ বেড়ে গেছে। তাই লাভ একটু কম হয়। তারপরও প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা লাভ থাকে।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়