এ মান্নান আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ ►
আর কতদিন এভাবে বাশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হবে চরবাসিকে, তার জবাব নেই কোথাও। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার শাখা নদী বা ক্যানেল হতে মুল নদীর দুরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। নদীর গতিপথ আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। ইতোমধ্যে খোদ্দা গ্রাম কাইম এলাকায় পরিণত হয়েছে।
শুধু পরিবর্তন হয়নি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এভাবে এলাকারবাসী, জনপ্রতিনিধি ও বিত্তশালীদের স্বেচ্ছাশ্রম এবং অর্থায়নে বাশের সাঁকো নির্মাণ করে তার ওপরদিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে চরবাসিকে। আজও স্থায়ীভাবে কোন প্রকার ব্রিজ বা সেতু নির্মাণ হয়নি। প্রতিদিন ওই রুটে ১০ গ্রামের কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
খোদ্দা গ্রামের স্কুল শিক্ষার্থী পুতুল রানী জানান, অনেক কষ্ট করে প্রতিদিন বাশের সাকোঁর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। সেতু বা ব্রিজ না থাকায় রিকসা, ভ্যান কিছুই পাওয়া যায় না। সে কারনে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হয়।
ব্যবসায়ী মোজাহার আলী জানান, উপজেলা শহর হতে ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া অন্য কোন বাহনে যে কোন প্রকার মালামাল বহন করা যায় না। তাছাড়া বহন খরচ অনেক বেশি। সে কারনে অন্যান্য বাজারের চেয়ে ৫ হতে ৬ টাকা বেশি দরে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রি করতে হয়। স্কুল শিক্ষক এমদাদুল হক জানান, এই পথ দিয়ে চর তারাপুর, খোদ্দা, নিজাম খা, রামুডাকুয়া, বজরা, কালপানি, ডাঙ্গার চর, লাঠশালাসহ ১০টি গ্রামের কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ পারাপার হয়। এছাড়া অনেক স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থী অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে বাশের সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। ওই স্থানে স্থায়ীভাবে ব্রিজ বা সেতু নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন।
তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর বর্ষাকাল আসলে চরবাসির চলাচলের জন্য নতুন করে সাঁেকা নির্মাণ করে দিতে হয়। এতে প্রায় এক হতে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। ব্রিজ বা সেতু নির্মাণের জন্য বহুবার আবেদন দেয়া হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন প্রকার বরাদ্দ আসেনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নদী এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু করোনার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোন বরাদ্দ আসেনি। উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আরেফিন খান জানান, গুরুত্ব বিবেচনা করে তালিকা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।