শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) ►
শ্লীলতাহানি চেষ্টা মামলার বাদীকে হুমকি প্রদান করাসহ কুৎসা রটিয়ে ও মিথ্যা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করানো হয়েছে। সেইসাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। জামিনে বেরিয়ে এসে আসামী ও তার লোকজন মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগে সামাজিকভাবে হেয় করার এমন অপচেষ্টা করছে।
মামলার বাদী নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েটি নিজে শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় ঐতিহ্য আনা রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন অভিযোগ তুলে ধরেছে। এসময় তাঁর সাথে মা ও মামা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়েটি বলেন, আমি একজন নিগৃহিত নারী। শারীরিক ও মানসিকভাবে একটি পরিবার কর্তৃক সম্মানের দিক দিয়ে নির্যাতিত। গত ২ নভেম্বর আমি সম্পর্কে দুলাভাই ও শিক্ষক পরিচয়ের একজন অমানুষ কর্তৃক শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছি। আমাকে বাসায় একা পেয়ে পরিকল্পিতভাবে এমন জঘন্য ও অমানবিক কাজ করেছে। অল্পের জন্য চুড়ান্ত সর্বনাশের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি।
এই অন্যায়ের প্রেক্ষিতে আইনের আশ্রয় নিয়ে মামলা করেছি। মামলা নং ২৬৩/২২। ওই মামলায় আসামী জুলফিকার রহমান (হেলাল মাস্টার) গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করে। জামিনে বেরিয়ে এসে তিনিসহ তার পরিবারের লোকজন আমাকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হয়রানী করছে।
ছাত্রীটি আরও বলে, লোকটি সেদিন পশুসুলভ আচরণ করে অবৈধভাবে জৈবিক লালসা চরিতার্থে ব্যর্থ হলেও তার ছেলে এখন আমার চরিত্রহনন করে চলেছে। শ্লীলতাহানীর চেষ্টার মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সে সংবাদ সম্মেলনের নামে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে ও কুৎসা রটিয়েছে। বিভ্রান্তিমুলক তথ্য দিয়ে প্রভাবিত করে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে।
অপকর্মের শাস্তি থেকে রেহাই পেতে অপচেষ্টা হিসেবে এই কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের সাথে তাদের জমিজমা সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা চলার কথা বলা হয়েছে। যা আদৌ সত্য নয়। আসামীর ছেলে সাদমান আজিজি তার বাবা হেলাল মাস্টারের লাম্পট্যপনাকে আড়াল করতে সম্পূর্ণ মিথ্যের আশ্রয় নিয়েছে।
একইভাবে সে আমার বিরুদ্ধে বাবার সাথে অসদাচরণ ও সম্পর্কের অবনতির আজগুবি অভিযোগ এবং আমার বিরুদ্ধে বহুবিবাহ ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মত কল্পকাহিনীও তৈরী করেছে। আমাকে দুশ্চরিত্রা ও মাদকসেবীও বলেছে। এজন্য নাকি সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় আমাকে সৈয়দপুর ক্যান্টপাবলিক স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। যা বানোয়াট। কারণ, আমি ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই এসএসসি পাশ করেছি।
মেয়েটির মা বলেন, বস্তুত তারা আমাদের সামাজিকভাবে হেয় ও সম্মানহানী করতে এভাবে একের পর এক মিথ্যা ও মনগড়া কথা বলেছে। কেননা আসামী নিজেই পুলিশের কাছে তার অনৈতিক কাজ শিকার করেছে। জোরপূর্বক শ্লীলতাহানীর চেষ্টার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর ফলে তার ধার্মিকতার মুুখোশের আড়ালের কুৎসিত চরিত্রটা প্রকাশ হয়ে পড়ায় শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা হিসেবে তারা কথার নোংরামিতে মেতেছে। তাই বাদীর সাথে সাথে সাক্ষীকেও বিতর্কিত করতে আসামীর কাছ থেকে কৌশলে টাকা চাওয়ার ভুয়া অভিযোগ তুলেছে। যা একেবারে ভিত্তিহীন এবং ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
তারা বলেন, আসামীপক্ষ খুবই প্রভাবশালী ও টাকাওয়ালা। তাই তারা বিভিন্ন জনকে দিয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। এমনকি প্রাণনাশের হুমকীও দিচ্ছে। একেতে শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছে। তার উপর মিথ্যে প্রচারণার মাধ্যমে পেরেশানি করছে। এতে মা মেয়ে অত্যন্ত আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্রামের বাড়িতেও যেতে পারছিনা।
এজন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি নিরাপত্তা প্রদানসহ সঠিক তদন্তপূর্বক বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন দিয়ে সুষ্ঠু ও সুবিচার নিশ্চিতে সহযোগীতার আহ্বান জানান তারা। সেইসাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ উর্ধতন কর্তৃৃপক্ষের কাছেও সহযোগীতার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও বিচারপ্রার্থী ওই দুই নারী।