সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: ►
সৈয়দপুরে শোবার ঘরের ভিতর থেকে আটকানো দরজা ভেঙে তৌহিদুল ইসলাম রাসেল (৩৮) নামে যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটায় শহরের রাসূলপুর এলএসডি এলাকার তাহেরা ভিলার দোতালায় এই ঘটনা ঘটেছে। রাসেল ওই এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের একমাত্র ছেলে।
পরিবারের দাবী সে আত্মহত্যা করেছে। তারা জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে স্ত্রী লিজার সাথে মনোমালিন্য চলছিল রাসেলের। গত শুক্রবার ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেছে লিজা। সেকারণে বেশ হতাশা আর দুশ্চিন্তায় ছিলো সে। দুইদিন ধরে শহরের রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন তার দোকানও খোলেনি।
শনিবার সন্ধায়ই সে শুয়ে পড়ে। এর আগে মাকে বলেছে রাতে খাবোনা আর মাথা ব্যাথা করছে তাই ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ছি। রাতে ডাকাডাকি করবেনা। সেজন্য রাতে কেউ তার খোঁজও নেয়নি। কিন্তু সকালে ১০ টা পেরিয়েও রাসেল না ওঠায় ডাকতে গিয়ে দেখা যার দরজা ভিতর থেকে আটকানো। বার বার ডাকাডাকি সত্বেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
এমতাবস্থায় আত্মীয়স্বজন সহ স্থানীয় ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলাম মানিক ও সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউল হকসহ পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে সাংবাদিক ও পাড়া প্রতিবেশীরাও সমবেত হয়। পরে সকলের উপস্থিতিতে পুলিশ দরজা ভেঙে বিছানায় হাটুগাড়া ও গলায় প্লাস্টিকের রশি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলানো অবস্থায় লাশ দেখা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খাওয়ার পর গলায় রশি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। তবে ওষুধের প্রভাবে না গলায় ফাঁসের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাসেল ইতোপূর্বে ব্র্যাক ব্যাংক ও উত্তরা ইপিজেডে চাকুরী করেছে। প্রায় ছয়মাস হলো চাকুরী ছেড়ে সে শহরের পাইলট বালিকা স্কুল ও কলেজের সামনে 'ইসলাম ফটোস্ট্যাট ও ষ্টেশনারী' নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেছে। চাকুরী ছেড়ে ব্যবসা করা নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি। মনোমালিন্য থেকে শেষ পর্যন্ত মানসিক চাপে আত্মহত্যা।
নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল তদন্ত শেষ করা হয়েছে। কারো কোন অভিযোগ না থাকলে অপমৃত্যু মামলা হবে এবং লাশ দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
যেহেতু তার স্ত্রী ও সন্তান আছে তাই স্ত্রীর পক্ষ থেকে ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন। সে ব্যাপারে স্থানীয় বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরদ্বয় ও পরিবারের লোকজনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আলোচনা করছেন। তাঁরা যে সিদ্ধান্ত নিবেন সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।