তাজুল ইসলাম রেজা, সাদুল্লাপুর►
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পল্লি চিকিৎসক অপহরণের দুইদিন পরেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তবে অপহরণকারীরা এ পর্যন্ত ৪-৫বার ফোন করে অপহৃত তরিকুলের ছোট ভাই হিরু মিয়ার কাছ থেকে টাকা দাবি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে শনিবার (৩ মে) রাতে এ ঘটনায় ওই পল্লি চিকিৎসকের ছোট ভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও সাত-আটজন আসামি করা হয়েছে বলে সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার (২ মে) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে পল্লি চিকিৎসক তরিকুলকে অপহরণ করে দূর্বৃত্তরা। পরে এ ঘটনার ১৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনেহিঁচড়ে একটি অটো রিক্সা-ভ্যানে তুলছেন। এ সময় তাঁর পড়নের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়। ভ্যানে তোলার পর কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে তাঁকে ধরে আছেন। এ সময় আশপাশের কয়েকজন ঘটনাটি দেখতে থাকেন। তরিকুল তাঁদের সাহায্য চাইলেও সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। একজন ভ্যানটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে আজ (রবিবার, ৪ মে) এ ঘটনার আরও একটি ২০ সেকেন্ডের ভিডিও মাধুকরের কাছে এসেছে। যেখানে দেখা যায়, এ ঘটনার সময় ওখানে পুলিশের পোশাক পরিহিত এবং মাথায় হেলমেট পরা একজন দাড়িয়ে আছেন। তবে ওই পুলিশ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ওই পল্লি চিকিৎসকের ছোট ভাই হিরু মিয়া জানান, অপহরনের দুইদিন পরেও তার ভাইকে পুলিশ উদ্ধার করতে পারে নাই। তবে দূর্বৃত্তরা এ পর্যন্ত ৪-৫ বার তার নিকট ফোন দিয়ে টাকা দাবি করেছেন। তিনি আরও জানান, সর্বশেষ রোববার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দূর্বৃত্তরা হিরুকে ফোন দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ওই এলাকায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে। মোটরসাইকেল থামিয়ে তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। মারধরের পর জোরপূর্বক তাকে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার আরও বলেন, অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলামান আছে।
ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকার বিষয়ে ওসি আরও জানান, এ রকম হওয়ার কথা নয়। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত. অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি একজন পল্লি চিকিৎসক। আগে তিনি ওই ইউনিয়নের টিয়াগাছা গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।