Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • ৮ ঘন্টা আগে
  • ৩২ বার দেখা হয়েছে

সুন্দরগঞ্জে তিস্তার ভাঙনে এক সপ্তাহে বিলীন ৭৫ বসতবাড়ি

সুন্দরগঞ্জে তিস্তার ভাঙনে এক সপ্তাহে বিলীন ৭৫ বসতবাড়ি

তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ►

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তীব্র ভাঙন দেখা হয়েছে।  জিও ব্যাগ-জিও টিউব এবং ব্লক ফেলে ঠেকানা যাচ্ছে না ভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে গত সাত দিনের ব্যবধানে ৭৫টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর নানাবিধ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।

গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা কাপাসিয়া, হরিপুর , শ্রীপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের মুখে পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর হতে অন্য চরে যাওয়া আসা করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা , হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর তিস্তায় পানি বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় নদী ভাঙন। চলতে থাকে বছর ব্যাপী।  নদী পাড়ের মানুষের দাবি, স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ দিনেও স্থায়ী ভাবে নদী ভাঙন রোধ, ড্রেজিং, নদী খনন, ও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করেনি সরকার। যার কারনে প্রতি বছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, হাজারও একর ফসলি জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। সরকার কোটি টাকা খরচ করে ব্লক, জিও ব্যাগ এবং জিও টিউব ফেলেও ভাঙন ঠেকাতে পারছে না।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটি কাপাশিয়া গ্রামের মামুন মিয়া বলেন, হঠাৎ করে তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে তার তার বসতবাড়িসহ এক বিঘা জমির তোষাপাটসহ নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভোরের পাখি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ভাঙনের মুখে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি। তিনি আরও বলেন নদীতে পানি বাড়লে এবং বন্যা আসলে তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। অথচ দেখার কেউ নাই। সামন্য ত্রান বিতরণ করে দায় এড়িয়ে যান সকলে।

হরিপুর লখিয়ার পাড়া গ্রামের সোলেমান মিয়া মিয়া বলেন প্রতিবছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদী জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। একজন চরবাসিকে মৌসুমে কমপক্ষে ৪ বার ঘরবাড়ি সরাতে হচ্ছে। কিন্তু আজও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধের কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না। 

কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া বলেন, গত সাত দিনের ব্যাবধানে তার ইউনিয়নের উত্তর লালচামার গ্রামে তিস্তার তীব্র ভাঙনে ৭৫ পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। স্কুল, মসজিদসহ ভাঙনের মুখে শতাধিক পরিবার তাদের বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।

হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলামের দাবি নদী খনন, ড্রেজিং, স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে কল্পে বহুবার চাহিদা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আজও কোন ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ হতে নেয়া হয়নি। শুধুমাত্র ভাঙন রোধে প্রাথমিক ভাবে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। স্থায়ী ভাবে ভাঙন ঠেকানো না হলে চরবাসির দুঃখ কোন দিনও দুর হবে না। ভাঙনে প্রতিবছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি এবং হাজারও একর ফসলি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। 

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ সরকারের উপর মহলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad