মাধুকর ডেস্ক►
নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে কারখানা বন্ধ ও ছাঁটাইয়ের জেরে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আজ (মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকের নাম হাবিবুর রহমান (২০)। তিনি ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি নিটিং কারখানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়ের কাজীরহাট গ্রামে; বাবার নাম দুলাল উদ্দিন।
হাবিবুর রহমানের বড় ভাই আশিকুর রহমান বলেন, ‘হাবিবুরের কারখানায় নাইট ডিউটি ছিল। কাজ শেষে আজ সকালে ইপিজেড থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।’
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইপিজেডের এভারগ্রিন নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সম্প্রতি ৫১ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। এ নিয়ে সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এ অবস্থায় শ্রমিকদের বেতন–ভাতা না দিয়ে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এভারগ্রিন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়ে ইপিজেডের প্রধান ফটকে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়।
আজ সকাল আটটায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে এভারগ্রিন কারখানার শ্রমিকেরা ওই নোটিশ দেখতে পান। ভেতরে ঢুকতে না পেরে তাঁরা ইপিজেডের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। এ অবস্থায় নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং তাঁদের সরিয়ে দিতে যান। তখন উত্তেজিত শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। শ্রমিক হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন আরও ১০ জন। পরে হতাহত শ্রমিকদের নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফারহান তানভিরুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাবিবুর রহমানকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এ ছাড়া আহত ছয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার বিষয়ে ওই চিকিৎসক বলেন, ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে।
হাসপাতালে ভর্তি ছয়জন হলেন মোমিনুর রহমান (২৫), মো. শাহিন (২৬), নুর আলম (৩০), মোস্তাক আহমেদ (২৫), লিপি আক্তার (২৬) ও জমিলা খাতুন (৩৫)।
এ বিষয়ে উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল জব্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বলেন, ‘আমরা এখনো সড়কে। লোকমুখে একজন মারা যাওয়ার কথা শুনছি। কেউ মারা গেছেন কি না, এখনো সঠিকভাবে বলতে পারছি না।’
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো