নিজস্ব প্রতিবেদক ►
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রায়হান মিয়া নামের এক যুবককে পুলিশ কনস্টেবলে চাকরি দেওয়ার নামে ৭ লাখ টাকা গ্রহণের অভিযোগ ওঠেছে। এই অভিযোগ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সদ্য বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক বকুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। এই টাকা ফেরৎ চাওয়াকে কেন্দ্র করে উল্টো জেলহাজতে বাস করতে হচ্ছে প্রতারিত রায়হানসহ আরও তিনজনকে। সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের বৈষ্ণবদাস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে শনিবার (৬ মে) দুপুরে সাদুল্লাপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগি রায়হান মিয়ার বাবা সেকেন্দার আলী আয়নাল। এতে আয়নালের স্ত্রী রুপিয়া বেগম, মেয়ে সিমা বেগম, রসুল ইউপির সাবেক সদস্য লাইলী বেগম, আতাউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সেকেন্দার আলী আয়নাল তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক (সাময়িক বহিস্কৃত) ও ছাপরহাটি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে বকুল বিশ্বাসের সঙ্গে সাদুল্লাপুরের শ্রীরামপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও পশ্চিম দামোদরপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলামের পুর্ব পরিচয় রয়েছে। এই সুবাদে আমার ছেলে রায়হান মিয়াকে টাকার বিনিময়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার জন্য তাদের মাধ্যমে আমাকে প্রস্তাব করেন।
এরপর ৭ লাখ টাকা দিলে চাকরি হবে মর্মে আমাকে জানায় বকুল বিশ্বাস। ছেলেটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে বকুল বিশ্বাসকে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম দফায় ৮০ হাজার টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফায় ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা বকুল বিশ্বাসকে পরিশোধ করেছি। এরপর আবারও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। একপর্যায়ে ২৬ এপ্রিল এই ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার জন্য আমার বাড়িতে বকুল বিশ্বাস আসেন। এরপর তার একটি এসএমএস ও আচারণ বিধি সন্দেহ হয়। যা সম্পূন্নভাবে প্রতারণার চেষ্টা প্রমাণিত হয়। এই অপকর্মের কারণে তার কাছে প্রদানকৃত ৭ লাখ টাকা ফেরৎ চাওয়া হয়। এ নিয়ে তার সঙ্গে রাতভর আলোচনা চলছিল।
এরই মধ্যে ২৭ এপ্রিল ভোরবেলা সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ আমার বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত সকলকে থানায় নিয়ে যায়। এ থানা থেকে পুলিশ ২৮ এপ্রিল আব্দুর রাজ্জাক, জাহিদুল ইসলাম, কবিরুল ইসলাম, রায়হান মিয়া ও বকুল বিশ্বাসকে সুন্দরগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। এরপর এই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেরাজুল ইসলাম বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে আমার কাছে থাকা টাকা দেওয়ার প্রমাণিত চেক ও ষ্ট্যাম্প জমা নিয়ে পরবর্তী কোন সমাধা করেনি। এমনকি চেক ও ষ্ট্যাম্পগুলো আমাকে ফেরৎ দেওয়া হয়নি।
একপর্যায়ে প্রতারক এই বকুল বিশ্বাস কৃষক লীগের সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বকুল বিশ্বাসকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তার ছোট ভাই গোলাম আজম বাদি হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করেন। এই এজাহারের আসামি হিসেবে আব্দুর রাজ্জাক, জাহিদুল ইসলাম, কবিরুল ইসলাম ও রায়হান মিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। তারা এখনো জেলহাজতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বকুল বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেরাজুল হক সংবাদকর্মীদের বলেন, আয়নাল হয়তো বকুল বিশ্বাসের কাছে টাকা পেতে পারে। তবে থানায় কোন চেক কিংবা ষ্ট্যাম্প নেওয়া হয়নি।