Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৩-৬-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৩:২০

গোবিন্দগঞ্জে প্রাচীন আমলের প্রসাদের ধ্বংসাবশেষ নিশ্চিহ্নের পথে

গোবিন্দগঞ্জে প্রাচীন আমলের প্রসাদের ধ্বংসাবশেষ নিশ্চিহ্নের পথে

গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি ►

গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর ভায়া ঘোড়াঘাট আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলের সময় ও আসা-যাওয়ার পথে কাটার পশ্চিম পাশে লক্ষ্য করলেই চোখে পড়বে পাহাড় সাদৃশ্য একটি সুউচ্চ ঢিবি। দুর থেকে মনে হতে পারে সবুজ পাহাড়। প্রকৃতি প্রেমী যে কারো মন চাইবে একটু ঘুরে আসি। কিন্তু, কাছে গেলে আসল বিষয়টি ধরা পড়বে সকলের কাছে।  আসলে ঢিবিটি আর কিছুই না এটি একটি প্রসাদের ধ্বংসাবশেষ। প্রাচীন আমলের ইটের তৈরী  একাধিক তলা বিশিষ্ট এই ভবনের ধ্বংসাবশেষের সিঁড়ি দিয়ে আগে ওপর থেকে ৩ তলা পর্যন্ত নীচে নামা যেত। অযত্ন অবহেলায় সংস্কার না থাকায় ক্রমেই সেই সিঁড়ির মুখ মাটির আস্তরণে ঢাকা পড়ে গেছে। স্থানীয়দের কাছে উচুঁ এই ধ্বংসাবশেষটি ডাকাতের মেড় নামে পরিচিত। 

 প্রাচীনকাল থেকেই এই প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ থাকলেও এই স্থাপনাটি কতদিনের পুরানো সে ব্যাপারে প্রবীণদের কাছ থেকেও কিছু জানা যায়নি। তবে জনশ্রতি এবং পৌরনিক কাহিনী মতে এই ভবনটি বিরাটরাজার রাজ প্রাসাদের বহিবিভাগের অংশ। এখান থেকেই প্রাসাদের নিরাপত্তা বিধান করা হতো। ধ্বংসপ্রাপ্ত এই প্রাসাদটির দেখতে অনেকটা বর্গাকৃতির। এর উচ্চতা বর্তমানে প্রায় ৪০ফুট এবং প্রসারিত প্রায় ২০০ ফুট। ডাকাতের ম্যার হিসেবে পরিচিত এই জায়গাটি সাপমারা ইউনিয়নের রামপুরা মৌজায় অবস্থিত। বর্তমানের এই মৌজার জমি  অধিগ্রহণের পর রংপুর চিনিকলের আওতাধীন সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের মধ্যে পড়েছে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৭ কিঃমিঃ দুরে স্থপনাটির অবস্থান। 

১৯৫৫ সালে রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে এই জায়গা ছিল জঙ্গলার্কীণ।  ফাঁকে ফাঁকে স্থানীয়রা বসবাস করতেন। চিনিকলের খামার হলে চাষাবাদের জন্য বিভিন্ন ধরণের আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয় তখন এই স্থাপনার বেশ ক্ষতি হয়।  বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে ১৯৫৯ সালে প্রত্নতত্ব বিভাগ খননকাজ চালিয়ে  ৫টি ধ্বংসপ্রাপ্ত  প্রাসাদের সন্ধান লাভ করেন। এখানে খননকালে পোড়ামাটির ফলক, পাথরে মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীর খোদাই করা ফলক, বর্শা, ছোট ছোট মূতি পাওয়া যায়।

উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের চকরহিমাপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন জানান,  মুক্তিযোদ্ধের পরেও এই প্রাসাদের ইট ও অন্যান্য অবকাঠনো অনেকটা দৃশ্যমান ছিল।  সেসময় প্রায় ১০টি কক্ষ ছিল, আঙ্গিনা ছিল, বারান্দা ছিল বারান্দায় ছোট ছোট গর্তছিল, বাহিরে পর্যবেক্ষণ করার জন্য ছোট ছোট ফাঁকা স্থান ছিল। আর দেয়ালে নানা ধরণের চিত্রকর্ম এবং দৃষ্টিনন্দন করতে ছিল খোদাই করা নানা ধরণের মুর্তি। কালের আবর্তে সে সব ঢাকা পড়ে গেছে।  

তিনি বলেন এই স্থানটি আগে অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন থাকায় আগে  ডাকাতরা বিভিন্ন স্থান থেকে ডাকাতি করা মালামাল সংরক্ষণ ও ভাগাভাগি করত এ জন্য এই স্থানটি ডাকাতের মেড় নামে পরিচিতি লাভ বরে। স্থানীয়দের দাবী  প্রত্নতত্ত বিভাগ নতুন করে খনন শুরু করলে হয়ত পুরাকালের প্রাচীন ইতিহাস উঠে আসত। আর নতুন প্রজন্ম জানতে পারতো এক সময়ের সমৃদ্ধ একটি জনপদের সঠিক ইতিহাস।
 

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad