গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি ►
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে খন্ডকালীণ হাঁসের খামার করে সফলতা পেয়েছেন দিনমজুর জিল্লুর রহমান। তার সফলতা স্থানীয়দের কাছে এখন তিনি একজন আদর্শ হাঁসের খামারী। ১০/১২ টি থেকে শুরু করে তার খামারে হাঁসের সংখ্যা এখন প্রায় ১হাজার হাঁস। তার দেখাদেখি এবং পরামর্শ নিয়ে এই এলাকায় আরো ৮/১০ উদ্যোক্ত সৃষ্টি হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের মাদনপুর গ্রামের বাসিন্দা জিল্লুর রহমান। অভাব অনটন ছিল সংসারের নিত্য সঙ্গী। অন্যের বাড়ীতে ও জমিতে শ্রম দিয়ে কোন রকমে সংসার চলত তার। গ্রামে হাঁসের বাচ্চা বিক্রি করতে আসা এক বাচ্চাওয়ালার কাছ থেকে ১০টি হাঁসের বাচ্চা কিনে সেই বাচ্চা পালন করে এই সফলতার সন্ধান পান।
পরের বার তিনি ২শ হাঁস পালন করেন। এরপর তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। গত ৫ বছর ধরে এই ব্যবসায় রয়েছেন। দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি থেকে এলাকাবাসীর কাছে তিনি হয়ে যান একজন সফল খামারী। তিনি এবার এক হাজার হাঁসে পালন করছেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে দিনভর দেখাশুনা করেন। বাড়ীর পাশেই মাদনপুরের একটি পরিত্যাক্ত মাঠে হাঁস পালনের সময় দেখা হয় জিল্লুর রহমানের সাথে। তার সফলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে ছিলাম মুরগী ব্যবসায়ি।
হাঁস ব্যবসায় সফলতা পাওয়ায় এখন হাঁসের খামার করে বেশ লাভবান হয়েছি। প্রতিবছর বৈশাখ ও অগ্রহায়ণ মাসে হাঁস পালন করি। আর ৬ মাস পরপর এক একটি হাঁসের চালান বিক্রি করি। আমার দেখাদেখি এবং পরামর্শে এই ব্যবসায় মদনপুর গ্রামের আরো ৪/৫ এই উদ্যোক্তা হয়েছেন। আসলে যারা বেকার রয়েছেন তারা ইচ্ছে করলেই এই ব্যবসা করে বেকারত্ব মুক্ত হতে পারেন। এ জন্য সরকারি সহায়তা দরকার। পাশাপাশি প্রাণীসম্পদ বিভাগের বেশী বেশী তদরকি ও রোগবালাই পরামর্শ দরকার।
একই গ্রামের যুবক রফিকুুল ইসলাম বলেন দারিদ্র ঘোচাতে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করেছিলাম। কিন্ত জিল্লুর ভাইয়ের সফলতা দেখে তার পরামর্শে প্রথম ধাপের ৫ শ’ হাসের খামার করে যে লাভের মুখ দেখেছি তাতে বিদেশে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়েছি। আগামীতে আরো বড় পরিসরে বেশী করে হাঁসের খামার দিবো।
গাইবান্ধার জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মাছুদার রহমান বলেন, চারণভূমি ও খালবিলে হাঁস পলনের ব্যয় কম তাই লাভ জনক। এতে করে খামারী উদ্যোক্তারা সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি মাংস ও ডিমের চাহিদা পুরনে সহায়ক হবে। মৌসুমী হাঁসের খামারিদের প্রশিক্ষণ,পরামর্শসহ সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে।