কুদ্দুস আলম►
বানেশ্বর দাস। বয়স ৬৪ বা তার একটু বেশি হবে। বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার কচুয়ার রাজভরপাড়া গ্রামে। মাছ ধরতে যমুনা নদীর চরে যান। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সাথে নেন বড়শি, শুকনো রুটি আর মাথার ওপর ছোট্ট একটা ছাউনি দেওয়ার জন্য একটু কাপড়।
ভয়াল যমুনা নদীর চরে ওই একটু কাপড়ের ছাউনিই একমাত্র ভরসা। চরে ওই ছাউনির নীচে একাকী পাড়ি দিতে হয় প্রচণ্ড রোদ, বৃষ্টি, ঝড়-ঝঞ্জা। এমনকি রাতও পাড়ি দেন একাকী। এ সময় শেয়াল বা ভয়ংকর প্রাণীর কবল থেকে বাঁচতে কাছে রাখেন সড়কি। মাছ ধরতে টানা দুই-তিন রাত দিন থেকেও কখনও কখনও মাছশূণ্য হাতে ফিরতে হয় রামেশ্বরকে। এ সময় তিনি শুকনো রুটি খেয়ে কোনো রকমে জীবন বাঁচিয়ে রাখেন।
রামেশ্বর দাসের দুই মেয়ে ও তিন ছেলে। দুই মেয়ে ও দুই ছেলের বিয়ে হয়ে গেছে। বিয়ের পর দুই ছেলে সুনীল ও রাজেন আলাদা হয়ে গেছে। এখন ছোট ছেলে সাধন ও স্ত্রী লাকী রাণীকে নিয়ে তার তিনজনের সংসার। আগে কাঠ কাটতেন। কাঠ কেটেই স্ত্রী, ছেলে মেয়ে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন বয়সের ভারে নুয়ে পড়ায় আর কাঠ কাটতে পারেন না। তাই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করলেও রামেশ্বরের কপালে কোনো ভাতার কার্ড মেলেনি। চরম কষ্টে তাদের দিন অতিবাহিত হচ্ছে। রামেশ্বর দাস বলেন, এ ব্যাপারে কেউ সাহায্য-সহযোগিতা করলে খুব উপকার হতো।