নীলফামারী প্রতিনিধি►
নীলফামারীর ডিমলায় কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নাউতারা-ডিমলা সড়কে নির্মাণাধীন আরসিসি গার্ডার সেতুর পাশে বিকল্প সড়কটি পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই সাথে সড়কের কাঠের সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চলাচলকারীরা।
আর কোনো রাস্তা না থাকায় দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়ায় যানবাহন চালক ও পথচারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঝুনাগাছ চাপানী ও নাউতারা ইউনিয়ন থেকে ডিমলা উপজেলায় যাতায়াতের একমাত্র পথ নাউতারা-ডিমলা সড়ক। ব্যস্ততম এই সড়কে প্রতিদিন যাত্রী ও পণ্যবাহী ছোট বড় হাজারো গাড়ি চলাচল করে থাকে।
খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানী ও নাউতারা থেকে উপজেলার সদরেও যান চলাচল করে ওই সড়ক দিয়ে। প্রতিদিন তিস্তা চরাঞ্চলের নানা পেশার শত শত মানুষের যাতায়াত এই সড়কে।
সরেজমিন দেখা যায়, নাউতারা-ডিমলা সড়কের সোনামনির ভাঙ্গা এলাকায় ৬০ মিটারের একটি আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। যাতায়াতের জন্য নির্মানাধীন সেতুর পাশেই খালের উপর বিকল্প সড়ক হিসেবে ছোট কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়।
কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণে সেতুর পাশের খাল ও ফসলি মাঠ পানিতে ডুবে যায়। পানির চাপে গত ২২ নভেম্বর বিকল্প সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে কাঠের সাঁকো ভেঙে যায়।
রাস্তায় দুই পাশে ছোট বড় গাড়ি আটকে আছে। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অটোভ্যানগাড়ী, মোটরসাইকেল চালক শিক্ষার্থী ও যাত্রীরা ভাঙ্গা সাঁকোর পাটাতন দিয়ে চলাচলের চেষ্টা করছেন।
অনেকে তাদের মালপত্র নিয়ে অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ আবার রাস্তা বদল করে ফিরে যাচ্ছেন। এতে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে তেমনি পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। তাছাড়া দূর্ঘটনার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছেন লোকজন।
অটোরিকশা চালক হাবিবুর রহমান জানান, গ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে সদরে যাচ্ছি। কিন্তু কাঠের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় এখানে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে সড়কটি পানির নিচে। সাঁকোর অবস্থাও খারাপ। সেখানে নামমাত্র পাটাতন দেয়া হয়েছে। সেগুলোও ধ্বসে গেছে। এখন ছোট গাড়িও চলাচল করতে পারছে না।
পথচারী জগদীশ চন্দ্র বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ থেকে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক নীচু হওয়ায় প্রায় ৪ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু এখানে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন।
দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিউলি আকতার বলেন সড়ক ডুবে সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় তারা স্কুলে যেতে পারছেন না। অনতিবিলম্বে সড়ক ও সাঁকো মেরামত করা না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। সবচেয়ে সমস্যা হচ্ছে জরুরী রোগী নিয়ে।
স্থানীয় অনেকে বলেন, পুরোনো সেতুর ভাঙ্গা আবর্জনা ও রাস্তার মাটি কেটে দায়সারাভাবে নিচু সড়ক ও ছোট কাঠের সাঁকো বানিয়ে নামমাত্র বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন ঠিকাদার। এতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে সামান্য বর্ষাতেও সড়কটি তলিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুর সাব ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম বলেন, দরপত্র অনুযায়ী বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। টানা ভারী বর্ষণের কারনে সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলে সড়ক আবারও সংস্কার করা হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এলাকার কিছু লোক সেখানে নৌকা চালানোর জন্য কাঠের সেতু ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। নয়তো এমন দূর্দশায় পড়তে হতোনা।
উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, বিকল্প সড়ক দ্রুত সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। অবশ্যই জনভোগান্তি লাঘবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।