Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৮-৭-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১১:০৪

তিন দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

তিন দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

মাধুকর ডেস্ক►

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের মুক্তিসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

ঘোষিত ৩ দফা দাবি হলো— এক. রবিবারের মধ্যে সমন্বয়ক নাহিদ-আসিফসহ আটক সব শিক্ষার্থীদের মুক্তি, দুই. মামলা প্রত্যাহার, তিন. শিক্ষার্থী হত্যার সঙ্গে জড়িত সব দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

শনিবার রাতে অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন তিন দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টার এই আল্টিমেটামের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়। এসব দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানান তারা। একইসঙ্গে কোটা সংস্কার সংক্রান্ত সরকারের জারি করা সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখানের ঘোষণা দিয়েছেন সমন্বয়করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমন্বয় আব্দুল হান্নান মাছউদ, মাহিন সরকার ও সহসমন্বয়ক রিফাত রশীদ।

অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পুলিশের ধরপাকড়সহ নানা কারণে সব সমন্বয়কদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না। যে কারণে সমন্বিতভাবে তারা কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারছেন না।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আন্দোলনের মূল দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করছে সরকার। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল কমিশন গঠন করে এই সংকটের সমাধান করা। কিন্তু সেটি করা হয়নি বলেই আমরা এই পরিপত্র প্রত্যাখ্যান করছি।’

তারা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারসহ সমন্বয়কদের গ্রেপ্তার ও মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাছউদ বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।’

তিনি জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই তিন দফা না মানা হলে তা না হলে পরশুদিন (সোমবার) থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আরও কঠিন কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।

একইসঙ্গে রবিবার সারাদেশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন কর্মসূচিরও ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

এছাড়া সোমবার থেকে সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা, উপজেলা ও নগরকেন্দ্রিক ‘হেলথ ফোর্স’ গঠন করে আহত-নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি, এবং আহত-নিহত ছাত্র-নাগরিক ও তাদের পরিবারকে মানসিক ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনার ঘোষণা দেওয়া হয়।

একইসঙ্গে ‘লিগ্যাল ফোর্স’ গঠন করে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের নামে মামলার ডকুমেন্টেশন এবং যাদের আইনি সাহায্যের প্রয়োজন তাদেরকে সেই সাহায্যের ব্যবস্থা করারও ঘোষণা দেওয়া হয়।

নাহিদ, আসিফ ও বাকেরের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে গোয়েন্দা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদেরকে তুলে নেওয়া হয়। তবে কোথা থেকে তাদের তুলে নেওয়া হয় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এনিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পাঁচজনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হলো। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের হেফাজতে নেওয়ার বিষয়টি এর আগে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও নিশ্চিত করা হয়। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে সমন্বয়কদের নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ শনিবার রাতে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার জুনায়েদ আলম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, তাদের (সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ) ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে এবং সাম্প্রতিক ঘটনার ব্যাপারে জানার জন্য তাদেরকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার বিকেলে ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসারত অবস্থায় আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad