Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৩-১২-২০২৫, সময়ঃ সকাল ১১:১৬

তিস্তার বুকজুড়ে সবুজের সমারোহ

তিস্তার বুকজুড়ে সবুজের সমারোহ

তিস্তার বুকজুড়ে সবুজের সমারোহ—ছবি: মাধুকর।

তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ

নদী খনন, ড্রেজিং, শাসন ও সংরক্ষণ না করায় উজান থেকে নেমে আসা পলি জমে অগভীর খরস্রোতা তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে রূপ নিয়েছে। দীর্ঘদিনের তিস্তার ভাঙনে জমি জিরাত খুঁয়ে যাওয়া পরিবারগুলো যেন তাদের  প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তিস্তায় শেষ সম্বল হারিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাওয়া পরিবার গুলো পুনরায় চরে ফিরে এসে বাপ দাদার জমিতে পরিজন নিয়ে নানাবিধ ফসলের চাষাবাদ শুরু করছেন। তিস্তার চরাঞ্চল এখন কৃষিতে সম্ভাবনাময় জোনে পরিনত হয়েছে। তিস্তার বুক জুড়ে চলছে নানাবিধ ফসল চাষাবাদের মহাৎসব। মওলানা ভাসানী সেতুর তলদেশ যেন সবুজের সমারহে ভরে উঠেছে।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। বিভিন্ন চরাঞ্চলে এখন  নানা জাতের শাকসবজি, আলু, বেগুন, মরিচ, ছিটা পিয়াজ, আদা, রসুন, সিম, ধনে পাতা, গাজর, কফি, মুলা, লাউ, গম, তিল, তিশি,সরিষা, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হচ্ছে। চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফিরে দেখা গেছে বাহারি ফসলের নজর কারা দৃশ্য।

কথা হয় হরিপুর চরের জরিপ আলীর সাথে, তিনি বলেন আজ থেকে দশ বছর আগে তার ৫ বিঘা জমি নদীতে বিলিন হয়ে যায়। যার কারনে তিনি বাপ দাদার ভিটা ছেড়ে দিনাজপুরে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত ৫ বছর হল তার চরের জমিগুলো আবাদিতে জমিতে পরিনত হয়েছে। সে এখন বাপ দাদার ভিটায় ফিরে এসে পুনরায় চাষাবাদ শুরু করেছে। তিনি বলেন গত বছর ৪ বিঘা জমিতে ছিটা পিয়াজের চাষ করে এক লাখ টাকা লাভ করেছে। এ বছর ৩বিঘা জমিতে আলু, এক বিঘা জমিতে ভুট্টা এবং এক বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেছেন। তিনি আশাবাদি চলতি মৌসুমে তিনি সব মিলে দেড় হতে দুই লাখ টাকা লাভ করবে।

হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, তিস্তার চরাঞ্চল এখন কৃষি জোনে পরিনত হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক ফসল চাষাবাদের পর তা বাজারজাত করছে কৃষকরা। আবার অনেকে নতুন করে চাষাবাদ করছেন। কিন্তু চরের কৃষকের একটাই দুঃখ চরাঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ, বাজারজাত করণ এবং প্রক্রিয়াজাত করণের কোন ব্যবস্থা নাই। সে কারনে চাষিরা মুনাফা অর্জন করতে পারছে না। তার ভাষ্য তিস্তার চরাঞ্চলে যে সব ফসল উৎপাদন হয় তাতে করে ২ হতে ৩টি হিমাগার প্রয়োজন। অথচ সুন্দরগঞ্জে একটির বেশি হিমাগার নেই। তাছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন থাকায় চরাঞ্চল হতে চাষিরা উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারে নিতে পারছে না। 

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাশিদুল কবির বলেন, তিস্তার চরাঞ্চল এখন আবাদি জমিতে পরিনত হয়েছে। চরাঞ্চলের মাটিতে পলি জমে থাকার কারণে অনেক উর্বর। সে কারণে রাসায়নিক সার ছাড়াই বিভিন্ন ফসলের ফলন ভাল হচ্ছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে ভুট্টা, গম, আলু, মরিচ, পিয়াজ, রসুন, সরিষা, তিল, তিশিসহ শাকসবজি এবং নানা জাতের ধান চাষ বেশি হচ্ছে। কৃষকরা নানাবিধ ফসল চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছে দিনের পর দিন।     

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad