Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৩-২-২০২৪, সময়ঃ সন্ধ্যা ০৬:২২

দিনাজপুর পৌরসভার সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ভারপ্রাপ্ত মেয়র বললের পিডিবি তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করেনি

দিনাজপুর পৌরসভার সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ভারপ্রাপ্ত মেয়র বললের পিডিবি তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করেনি

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর পৌরসভার ২২ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিক্রয় ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান (নেসকো)। অতি গুরুত্বর্পন স্থানে জেনারেটরের মাধ্যমে  বৈদ্যুতিক লাইনে সংযোগ সচল রেখে সাময়িক কার্যাকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে পৌর সভা ।

আজ শনিবার ভোরে পৌরসভার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় নেসকোর কর্মকর্তারা। এতে করে চার দিন ধরে পৌর কর্তৃপক্ষ জেনারেটর চালিয়ে জনসেবা অব্যাহত রেখেছেন।

এ নিয়ে পৌর সভার মেয়র ও নেসকোর  প্রধান নিবার্হী বক্তব্য  পরস্পর বিরোধী। দিনাজপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল বলছেন কোন নোটিশ না দিয়েই বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অপরদিকে পিডিবির বিক্রয় ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নেসকো দিনাজপুর প্রকৌশলী ফজলুর রহমান বলছেন নোটিশ দেয়া হয়েছে।

দিনাজপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ও নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাড়ে ২২ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

জানা যায়,দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল। অপর দিকে নেসকো দিনাজপুর-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিদেশে তাকায় দায়িত্বে রয়েছেন দিনাজপুর-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুর রহমান।

এ ব্যাপরে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুর রহমান বলেন, প্রায় সাড়ে ২২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত মেয়রের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছিল তারা প্রতি মাসের চলমান বিল পরিশোধ করবেন। কিন্তু এতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তাই লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।  

এ ব্যাপরে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল বলেন, কোন নোটিশ না দিয়েই লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আমি গত ১০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়ীত্ব গ্রহণ করি। এ সময় নেসকো  দিনাজপুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়। তাদের কে আমি জানিয়েছি প্রতি মাসের চলমান বিল পরিশোধ করব। সেই কথা অনুযায়ী নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছি।

গত ৩০ জানুয়ারী তারিখে আমি বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে রংপুরে মিটিং এ থাকায় ৩১ জানুয়ারী তারিখ সকালে জানুয়ারী মাসের বিলের চেক প্রদান করি। কিন্তু তারা কোন নোটিশ ছাড়াই ভোরে গোপানে বিদ্যুৎ ল্ইান বিচ্ছিন্ন করেন। এতে করে সব ধরণের সেবা যেমন জন্ম, মৃত্যু নিবন্ধন,অনলাইনে ট্রেড লাইনেন্স নবায়ন, পানির বিল প্রদানসহ ডিজিটাল সেবা এবং পৌরসবার স্বাস্থ্য বিভাগের ফ্রিজে থাকা শিশুদের বিভিন্ন প্রকার টিকার অ্যাম্পুল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আমি এবং আমার প্রকৌশলীরা তাদের সঙ্গে একাধিকবার তাদের সঙ্গে স্বাক্ষাতে দেখা করে জানুয়ারী মাসের বিদ্যুৎ বিল বাবদ  ৩১ জানুয়ারী ইস্যুকরা ১১ লক্ষ টাকার চেকটি গ্রহণ করার জন্য বলি । 

কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে চেকটিও গ্রহণ করছেনা এবং বিদ্যুৎ সংযোগও দেয়া হচ্ছেনা। এতে বাধ্য হয়ে জেনারেটর চালিয়ে পৌরসভায় জনবেসা সচল রেখেছি। অথচ বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে নেসকো  দিনাজপুর-২ এর অফিসের জায়গার ভাড়া বাবদ ৩৩ কোটি টাকা পাবে দিনাজপুর পৌরসভা। সেটি তারা পরিশোধ করছেনা। কই আমরা তো তাদের অফিস বন্ধ করে দেই নাই। তিনি আরও বলেন, তারা দিনাজপুর পৌরসভার সাড়ে ২২ কোটি টাকা যে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে এটি আমার দায়ীত্ব গ্রহণ করার আগের। প্রায় ২৫ বছর ধরে এই বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে।

এর আগে ২০ বছর ১৮/১৯ বছল আগে সফিকুল হক ছুটু মেয়র ছিলেন, সে সময় বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে পৌরসভার জায়গার বাড়া নিয়ে বৈঠক হয়। সে সময়  পৌরসভার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জায়গার বাড়া পরিশোধ করবেন বলে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু তারা এখনো সেই ভাড়া পরিশোধ করেননি। যদি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল এবং বকেয়া জায়গার ভাড়া যোগ বিয়োগ করা হয় তাহলে পৌর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে সাড়ে ১১ টাকা পাবেন। উল্লেখ্য এ নিয়ে গত ২০ বছরে দিনাজপুর পৌরসভার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে চার বার বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করা হলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad