Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১-৬-২০২৩, সময়ঃ সন্ধ্যা ০৬:৪৮

নারী উন্নয়ন ফোরামের ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প মেলা শুরু

নারী উন্নয়ন ফোরামের ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প মেলা শুরু

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর ►

নানা মহল থেকে সৃষ্ট সকল ষড়যন্ত্র ও প্রতিবন্ধকতসকে নস্যাৎ করে অবশেষে নীলফামারীর সৈয়দপুরে নারী উন্নয়ন ফোরামের ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প মেলা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকাল ৪ টায় এর উদ্বোধন করেন সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোখছেদুল মোমিন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগ সভানেত্রী সানজিদা বেগম লাকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমান লিটন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আমিনুল ইসলাম ও থানার তদন্ত ইন্সপেক্টর নুরুল হক।

সভাপতির বক্তব্যে নারী উন্নয়ন ফোরাম সভাপতি সানজিদা বেগম লাকী বলেন, আজকের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান একটা বিজয়। নারী শক্তি ও তাঁদের উন্নয়নে যারা আন্তরিক ও সহযোগী সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের বিজয়। অনেক লড়াই সংগ্রাম করে এই বিজয় অর্জন করতে হয়েছে। কেননা নারী ক্ষমতায়ন বিদ্বেষীরা ভূয়াতথ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মেলা ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্র করে। যে কারণে প্রায় ১৫ দিন থেকে মেলার আয়োজন করেও মূল কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছিলনা। 

পঁচা বামদের সাথে কতিপয় আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিক ও চিহ্নিত কুচক্রীরাও কুটকৌশলে মেতে উঠে। ফলে প্রশাসনে দ্বিধা সৃষ্টি হয় এবং অনুমতি পেয়েও ঝুলে যায় উদ্বোধন। ষড়যন্ত্রকারীরা হয়তো জানেনা দেশের সব জেলা উপজেলায় নারী উন্নয়ন ফোরামের কমিটি আছে। যার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ, উপকরণ ও অর্থ সহায়তায় আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলা হয়। 

এই নারীদের কোনভাবেই দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাঁদের মত উদ্যোক্তাদের সাথে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা আছেন। তিনিই মূলতঃ এই ফোরামের অভিভাবক। অথচ বোকারা সে ব্যাপারে না জেনেই অবিবেচকের মত উদ্যোক্তা মেলার বিরোধীতা করে নিজেদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতাই প্রকাশ করেছেন। এই মেলা আত্মকর্মে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রেরণা।

অকর্মণ্যরা এর গুরুত্ব বুঝবেনা। তারা শুধু ফাও খাওয়ার ধান্দায় থাকে। তাতে ব্যাঘাত হওয়ায় এমন অপরিণামদর্শী আচরণ করে। যার ফল কখনই শুভ হয়না। আমরা আশাকরি তাদের বোধোদয় হবে এবং ভবিষ্যতে এহেন অপকর্ম থেকে বিরত থাকবেন। নিজের ঘরের, পাড়ার, দেশের নারীদের উদ্যোক্তা তৈরী করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবেন।

বিশেষ অতিথি আমিনুল ইসলাম বলেন, নারীরা অবহেলার পাত্র নয়। বরং সমাজের অগ্রগতির সহায়ক শক্তি। বিশেষ করে উদ্যোক্তা ব্যাপক অবদান রাখছেন। যে কারণে সরকারও শিল্প উদ্যোক্তাদের নানা ক্ষেত্রে সহযোগীতা করছে। এধরনের মেলা তাদের অনুপ্রাণিত করে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে আরও দক্ষ হিসেবে গড়ে উঠতে। সেইসাথে দেশীয় ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পের পণ্যসমুহের প্রচার প্রসারের মাধ্যমে দেশে বিদেশে এর বাজার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তিনি মেলার সাফল্য কামনা করেন।

প্রধান অতিথি মোখছেদুল মোমিন বলেন, সকল বিধি মেনে অনুমতি নিয়েই মেলার কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষা শেষ না হওয়ায় নির্ধারিত তারিখে উদ্বোধন স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু এর মাঝেই মেলা বানচালে অপতৎপরতা শুরু করে একটি মহল। যা অহেতুক ও প্রতিহিংসা পরায়ণতা মাত্র। কেননা এই মেলা কর্ম উদ্দীপক ও সৃষ্টিশীল। এখানে অশ্লীলতা নেই, বাদ্য-বাজনা নেই। জুয়া-হাউজির মত নেই কোন অবৈধ কারবার। এমনকি ন্যুনতম মাইক বা সাউন্ড সিস্টেমও ব্যবহার হবেনা। 

বরং গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য ও হস্তশিল্পের সমন্বয়ে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ আনন্দ বিনোদনের নিষ্কলুষ আয়োজন। আমার জানামতে নারী উন্নয়ন ফোরাম ইতোপূর্বেও পিঠা উৎসব বা হস্তশিল্পের মেলা অত্যন্ত সফলতার সাথে অনুষ্ঠিত করেছে। কখনই কোনপ্রকার অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। অথচ সেই অজুহাতে মেলা বন্ধের চেষ্টা সৈয়দপুরবাসী নেতিবাচক হিসেবেই দেখছে। দীর্ঘ দিন পর আমরা এত আড়ম্বরপূর্ণ একটি আয়োজন পেয়েছি। আশাকরি সৈয়দপুর সহ আশেপাশের এলাকার লোকজন খুবই আন্তরিকভাবে উপভোগ করবে মেলা। 

উল্লেখ্য, খেলার মাঠে মেলা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু স্ট্যাটাসের প্রেক্ষিতে সমালোচনা শুরু হয়। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলও করা হয়। স্মারকলিপিও পেশ করে মেলার বিরুদ্ধে। তারওপর অবশেষে দশদিনের জন্য মেলার প্রাথমিক অনুমতি দেয়া হয়েছে। 

শুরু হওয়া নিয়ে দোলাচল থাকায় অধিকাংশ স্টলে এখনো মালামাল সাজানো হয়নি। তবে ইতোমধ্যে বেশকিছু দোকানে কেনাবেচা জমে উঠেছে। প্রবেশ পথে বেশ দৃষ্টি নন্দন গেট, ভিতরে আলোকসজ্জিত পানির ফোয়ারা তৈরী করা হয়েছে। শিশুদের জন্য বিশালাকৃতির চরকিসহ কয়েকটি রাইডও আছে। 

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad