সুলতান মাহমুদ চৌধুরী , দিনাজপুর ►
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে গত ১৮ ই মার্চ বহু কাঙ্খিত দেশের একমাত্র ভারত বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইপনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল প্রকল্প বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বোধনের পর থেকেই পাইপলাইনের তেল আসছে ।
এখন প্রতিদিন চাহিদা মোতাবেক ভারতের শিলিগুড়ির নুমালিগড় রিফাইনারী লিমিটেড (এনআরএল) পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানী তেল (ডিজেল) পার্বতীপুরের ডিপোতে আসছে । এতে করে এই অঞ্চলের জ্বালানী তেলের চাহিদা ও সরবরাহ সমতা রয়েছে। পাইপলাইনে জ্বালানী তেল (ডিজেল) আসায় পরিবহন খরচ ব্যারেল প্রতি ৬ মার্কিল ডলার সাশ্রয়ী হচ্ছে । ব্যারেল প্রতি ডিজেল তেলে মুল্য সাশ্রয়ী হওয়ায় ডিজেল তেলের দাম আরোও কমে যেতে পারে আশা করছেন এইর অঞ্চলের চাষীরা ।
দিনাজপুরসহ উত্তরাাঞ্চলে কৃষি ও যানবাহনের জ্বালানি তেলের সংকট একে বারেই কেটে গেল পাশাপাশি ডিজেল তেলের সহজ প্রাপ্তিতা নিশ্চিত হওয়ায় এই অঞ্চলের চাষীরা আশার সঞ্চার ঘটিয়েছে । বিশেষ কর ইরি বোরো মৌসুমে পানির সেচ এবং জমির চাষাবাদ শ্যালো মেশিন চালিত যন্ত্রের ডিজেলের প্রয়োজনীতা রয়েছে । চাহিদা আর সরবরাহ পাইপলাইনের মাধ্যমে সহজলভ্য হওয়ায় কৃষি কাজের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে । পাশাপাশি যানবাহনে জ্বালানি তেলের প্রাপ্তিতা নিশ্চিত হয়েছে এবং জ্বালানি তেলের সংকট কেটে যাচ্ছে। এক সময় বিশেষ করে ইরি বোরো মৌসুমের জ্বালানি তেলের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকত । এই পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল সরবরাহ হওয়ায় সংকট আর থাকবে না ।
দিনাজপুর সদরের শেখপুরা গ্রামের এনাম সরকার বলেন ,দিনাজপুরসহ এই অঞ্চল কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় সেচ কার্য অপরিসীম হয়ে পড়ে । এখন আরোও গরুর হাল নেই বললেই চলে । জমি চাষাবাদ করার জন্য এখন পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টরের ব্যবহার শুরু হয়েছে । এতে ডিজেল তেলের প্রয়োজন হয় । ইঞ্চিন চালিত প্রতিটি মেশিনে ডিজেল ব্যবহার করতে হচ্ছে ।
একই গ্রামের আব্দুল মমিন সরকার বলেন , এখন ইরি বোরো মৌসুম চলছে । শ্যালো মেশিন চালিয়ে জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে । এই পাইপলাইনে মাধ্যমে তেল আসায় হাতের কাছেই তেল পাওয়া যাবে । কৃষি কাজের উন্নয়ন ঘটাতে মহত উদ্যোগ গ্রহন করেছে সরকার ।
চিরিরবন্দরের সাইতারা গ্রামের জামাল উদ্দীন বলেন ,এক সময় জ্বালানী তেলে ডিপো থেকে ট্যাংক লরিতে তেল নিতে লাইন ধরে দাড়িয়ে থাকা লাগত । পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিপোতে ডিজেল আসায় এখন আরোও ট্যাংক লড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না ।
ট্যাংকলড়ীতে তেল সরবরাহকারী আবু রজব আলী বলেন পার্বতীপুরের ডিপোতে থেকে আগে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৫৮টি উপজেলায় জ্বালানী তেল সরবরাহ করা হত । এখন ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আসায় রংপুর বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগের ১৬টি জেলায় তেল সরবরাহ করা হচ্ছে । তেলের যোগান বেশি থাকায় সরবরাহ বেশি হচ্ছে ।
দিনাজপুর জ্বালানী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন বলেন , দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে । কৃষি কাজের সাথে ডিজেল তেল উতপোত ভাবে জড়িত । ভাল ফসলের জন্য পানির সেচ আবশ্যক । পানির সেচের জন্য ডিজেল তেলের প্রয়োজন । আগে মংলা বন্দর থেকে রেলের ওয়াগন দিয়ে পার্বর্তপুরের ডিপোতে ডিজেল তেলের সরবরাহ করা হত। ভারত থেকে স্বল্প সময়ে মধ্যেই পরিবহন খরচ ছাড়াই পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আসায় অনেক খরচ কমে যাবে ।
পাশাপাশি জ্বালানি তেলের সংকট একেবারেই কেটে গেল এবং এই অঞ্চলের মানুষের কৃষি ও যানবাহন সকল ক্ষেত্রেই জ্বালানি তেলের চাহিদা মোতাবেক যোগান পাওয়ার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে । পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানী তেল চাহিদা ও সরবরাহ এই ঠিক থাকায় এই অঞ্চলের মানুষের জন্য ভাগ্যেও চাকা পরিবর্তন হতে হতে বেশি সময় থাকবে না ।