আমিনুল হক, ফুলছড়ি►
সারা দেশে চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানের অংশ হিসেবে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এটিএম রাশেদুজ্জামান রোকনকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে গাইবান্ধা শহরের হকার্স মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাশেদুজ্জামান রোকন ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের সমিতির হাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এটিএম রাশেদুজ্জামান রোকন প্রথম দিকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও নব্বই দশকের শেষ দিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তিনি গাইবান্ধা-৫ আসনের সাবেক সাংসদ ও প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তার আশীর্বাদে তিনি কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং দীর্ঘদিন যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদক পদটি ধরে রাখেন। তবে ডেপুটি স্পিকারের মৃত্যুর পর তার মেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রাব্বি বুবলী নেতৃত্বে দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে মাহমুদ হাসান রিপন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার অধ্যক্ষ রোকন তার ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের পদ দখল করেছেন এবং কলেজকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। এছাড়া, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিরোধী মতাদর্শের লোকজনকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ‘ডেভিল হার্ন্ট’ অভিযানের অংশ হিসেবে রাশেদুজ্জামান রোকনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি গোপনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য ছিল।
ওসি আরও জানান, “আমরা তাকে আদালতে সোপর্দ করব। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে, যাতে কেউ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে।”