তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ ►
সরকারি বিধি নিষেধ তোয়াক্কা না করে বসতবাড়ী ঘেঁষে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর বাজার মেসার্স জোবেদা ফিলিং স্টেশন সংলগ্ল মেসার্স আব্দুর রশিদ এন্ড সন্স এলপিজি অটোগ্যাস ফিলিং স্টেশন স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। এলপিজি অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনটি স্থাপন হলে আশ পাশ বসতবাড়ী মারাত্বক হুমকির মুখে পড়বে, গ্যাস সরবরাহকালে অগ্নিকান্ড, বিষ্ফোরনসহ দূর্ঘটনার কবলে জীবন নাশের সম্ভাবনা উল্লেখ করে স্থনীয়রা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, গ্যাস স্টেশনটি স্থাপনের স্থানটি অত্যন্ত ঘণবসতিপূর্ণ এলাকা। এমনকি ওই এলাকায় বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার অফিস ও কিন্টার গার্ডেন স্কুল রয়েছে।
সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, এলপিজি সংক্রান্ত স্থাপনা নির্মাণে আবাসিক এবং জনবহুল এলাকা পরিহার করতে হবে। সেই সাথে পেট্রোলিয়াম আইন ২০১৬ মোতাবেক উপযুক্ত স্থানে প্লান্ট নির্মাণ করতে হবে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে উপজেলা পর্যায়ে সড়কের একই পাশে ২ হতে ৩ কিলোমিটার এবং বিপরীত পাশে ১ হতে ২ কিলোমিটার দুরে ফিলিং স্টেশন নির্মাণ করা যাবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের ছাড়পত্র বা অনুমতি থাকতে হবে।
বসতবাড়ীর ঘর হতে ৫০ হাত দুরেই আব্দুর রশিদ এন্ড সন্স এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশনটি স্থাপন করছেন বলেন, অভিযোগকারী মো. রাশেদুর রহমান মন্ডল ইউনিট। তার ভাষ্য প্লানটির আশ পাশ ১০টি বসতবাড়ি রয়েছে। এটি স্থাপন হলে যে কোন মহুর্তে জনজীবন বিপন্নসহ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতির শতভাগ সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে অসাধূ কর্মকর্তাদের সাথে যোগ সাজসে প্লানটি স্থাপন করছেন দাবি করেন তিনি। জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামানা করেছেন।
গ্যাস স্টেশনটি স্থাপন হলে যানবাহনের শব্দ দুষনের কারনে বসতবাড়ীতে থাকা যাবে না। সেই সাথে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া মারাত্বকভাবে ব্যহত হবে বলেন স্থানীয় আব্দুল হক মিয়া। তার ভাষ্য সরকারি নিয়ম মেনে গ্যাস ফিলিং স্টেশন স্থাপনে তাদের কোন বাঁধা নেই। বসতবাড়ী ঘেঁষে প্লান্ট নির্মাণে স্থানীয় যানমালের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মেসার্স রশিদ এন্ড সন্স এলপিজি অটোগ্যাস ফিলিং স্টেশনের প্রোপাইটার মো. আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন, তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানিও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনের নিয়মনীতি মেনে গ্যাস স্টেশনটি স্থাপন করছেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করে অনুমতি দিয়েছেন। প্লানটির পাশে একটি বসতবাড়ী রয়েছে। তবে সেটি বাউন্ডারী ওয়ালের বাইরে থাকবে। তার আশপাশ কোন ফিলিং স্টেশন নেই।
শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আযহারুল ইসলাম মুকুল বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন, গ্যাস ফিলিং স্টেশনে তেমন কোন ক্ষতি হয় না। তার পরও উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারি পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, তিনি এক সপ্তাহ ধরে প্রশিক্ষণের কারনে কর্মস্থলের বাইরে রয়েছেন। কর্মস্থলে ফিরে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল লতিফ জনী বলেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনের বাইরে গিয়ে কাজ করার কোন সুযোগ নেই। নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে গ্যাস ফিলিং স্টেশন স্থাপন করলে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. নাজির হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি এখনো ক্ষতিয়ে দেখা হয়নি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনের নিয়মনীতি না মেনে গ্যাস স্টেশনটি স্থাপন করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।