সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর►
নিজের তেমন জায়গা জমিন না থাকায় কাচা রাস্তার দুই ধারে নিজ উদ্যোগে সারি সারি পেপে গাছ লাগিয়ে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে চাচী আলতাফ হোসেন ।
খানসামা উপজেলার জমিদার নগর থেকে বরলাম বাজার যাওয়ার পথে কাঁচা রাস্তা হওয়ায় থাইল্যান্ড গ্রীন ল্যাডি জাতের ৪০০ পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন এই কৃষক। প্রতিটি পেঁপে গাছে থোকায় থোকায় পেঁপে ধরে আছে । এখন চাষী আলতাফের ধ্যান-জ্ঞান হচ্ছে এই রাস্তার দুই ধারে লাগানো পেঁপে গাছ ।
এই রাস্তার দুই ধারে পেঁপের বাগান দেখে অনেক পথচারী মুগ্ধ হচ্ছে । ইতোমধ্যে তিনি পেঁপে বাজারজাত করতে শুরু করেছেন ।
বানিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আলতাফ হোসেন। তিনি ওই গ্রামের গুলজার রহমানের ছেলে। বাবা ছেলে দুজনেই কৃষক। তারা সকল ধরনের ফসল আবাদ করেন।
রাস্তার ধারে থাকা জঙ্গল পরিষ্কার করে পরিত্যক্ত জায়গায় সারিবদ্ধ পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন তিনি। গাছে ঝুলে থাকা সবুজ পেঁপে দেখেই প্রাণ জুড়ে যায় পথচারীদের। তিনি তার পেঁপে গাছের প্রথম ধাপে প্রতি গাছ থেকে ৫ থেকে ৭ কেজি করে পেঁপে পেড়েছেন। তিনি গড়ে ১০ মণের বেশি পেঁপে উত্তোলন করেছেন। বাজারে প্রতিমণ পেঁপে তিনি ৭০০থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, আমি ছোট থেকেই বাবার সাথে বিভিন্ন ধরনের চাষ করি। আমি সব সময়ই কৃষি অফিসারের পরামর্শে চাষ আবাদ করি। এবারও নতুন করে পেঁপে চাষ করার কথা বলেন আমাদের কৃষি অফিসার ইয়াসমিন আক্তার ম্যাডাম। আমি রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত জায়গা জঙ্গল হওয়ায় আমি পরিষ্কার করে পরীক্ষা করার জন্য রাস্তার ধারে ৪০০শ পেঁপে গাছ লাগাই। আল্লাহ রহমতে গাছে পেঁপে ধরেছে। আমি এখন পর্যন্ত ১০ মণের বেশি পেঁপে বিক্রি করেছি এবং ভালো মানের দামেও পাচ্ছি। আমি আগামীতে আমার চাষ আবাদ জমি ও রাস্তা দুই ধারে বেশি করে পেঁপে চাষ করবো।
আবুল কালাম নামে এক পথচারী বলেন, আমি এই পথ দিয়ে হাট বাজারে যাওয়া আশা করি । কিন্তু রাস্তাটি পাকা না হওয়াতে রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় জঙ্গল হয়। আলতাফ সাহেব সেই জঙ্গল গুলি পরিষ্কার করে এবার পেঁপে চাষ করেন। তিনি নিজে অনেক পরিশ্রমি কৃষক। তিনি সবসময় তার চাষ আবাদ জমিতে সময় দিয়ে থাকে। এবার রাস্তার পাশে সুন্দর পেঁপে গাছ লাগিয়ে রাস্তাটি ফুটিয়ে তুলেছে।
স্কুল ছাত্র রাকির হোসেন বলেন , আমরা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়েই স্কুলে যাই । আলতাফ চাচা সারা দিন এই পেপে গাছের পরিচর্চা করেন । এখন প্রতিটি পেপে গাছে পেঁেপ ধরেছে দেখতেই ভাল লাগে । পেঁপে গাছ গুলি তেমন বড় হয়নি ছোট ছোট পেঁপে গাছে এত পরিমান পেঁপে ঝুলে আছে দেখতেই মন ছড়িয়ে যায় ।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আলতাফ হোসেন আমারই কৃষক। এ বছরে সাড়ে তিনমাসে গ্রীন ল্যাডি পেঁপে চারা লাগিয়েছিলেন আমাদের কৃষি বিভাগের পরামর্শে। আপনারা জানেন যে, বর্ষার মৌসুমে অন্যান্য সবজি কম থাকায় পেঁপে চাহিদা বাড়ে। তিনি বিষয়টি মাথায় রেখে এ পেঁপে চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে বাজারে ভালো মূল্যে বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছেন। আমরা আশা রাখি তিনি পেঁপে চাষ করে ভালো লাভবান হবেন।