নিজস্ব প্রতিবেদক►
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলাকারী সিজু মিয়ার মৃত্যুর ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ দাবি করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে।
এলাকাবাসীর উদ্যোগে আজ (শনিবার, ২৬ জুলাই) পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কে বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে পুলিশ সুপারের সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাসে এ কর্মসূচি তুলে নেয়া হয়। এ কর্মসূচিতে সিজুর স্বজন, এলাকাবাসী ও জুলাই যোদ্ধারা অংশ নেন।
সিজুকে পিটিয়ে হত্যা করে পুলিশ নাটক সাজিয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, সিজু অপরাধ করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারত। আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হতো। কিন্তু তা না করে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি; পানিতে ডুবে মৃত্যুর নাটক সাজানো হয়েছে। অথচ সিজু সাঁতার জানত। সে নদীপাড়ের বাসিন্দা। আর সাঁতার না জানলে সে কেনই বা পুকুরে ঝাঁপ দেবে?
এসময় সিজুর স্বজনেরা জানায়, একটি মোবাইল-ফোনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত। একটি দোকান থেকে সিজু একটি মোবাইল-ফোন কিনেছিল। সম্প্রতি সেটি চোরাই জানিয়ে সাঘাটা থানার দুইজন পুলিশ সদস্য বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। তারপর পুলিশের পক্ষ থেকে সাঘাটা থানায় যোগাযোগ করার কথা বলা হয়।
বিক্ষোভকারীরা এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। অবিলম্বে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
এ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সিজু মিয়ার মা রিক্তা বেগম, ইউপি সদস্য রমজান আলী, হাসু আল আমিন হিরু, জুলাইযোদ্ধা মেহেদী হাসান, জাহিদ হাসান জীবন, অতনু সাহা, জেলা শিবিরের সভাপতি ফেরদৌস সরকার রুম্মান প্রমুখ।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সাঘাটা থানায় অভিযোগ করতে এসে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশের এক কনস্টেবলের বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন সিজু মিয়া। পুলিশের অন্য সদস্যরা বাধা দিলে এক এএসআইকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেন তিনি। পরদিন শুক্রবার সকালে ওই পুকুর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। সন্ধ্যায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে রাত একটার দিকে সিজুর লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। পরে শনিবার তাঁকে দাফন করা হয়।
সিজু মিয়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাগুরিয়া গ্রামের দিনমজুর দুলাল মিয়ার ছেলে।