Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৪-১২-২০২৫, সময়ঃ সন্ধ্যা ০৬:৪৬

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শান্তিরক্ষী সবুজের বাড়ি পলাশবাড়ীতে শোকের মাতম

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শান্তিরক্ষী সবুজের বাড়ি পলাশবাড়ীতে শোকের মাতম

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শান্তিরক্ষী সবুজের বাড়ি পলাশবাড়ীতে শোকের মাতম—ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদক►

আফ্রিকার দেশ সুদানের আবেই এলাকায় অবস্থিত জাতিসংঘের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ জন শান্তিরক্ষী সদস্য নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

নিহতদের মধ্যে একজনের নাম সবুজ মিয়া। তিনি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট ভগমানপুর পূর্বপাড়া পাড়ার মৃত হাবিদুল ইসলামের ছেলে।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় আনুমানিক দুপুর ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী কতৃক ড্রোন হামলা পরিচালনা করা হয়। উক্ত হামলায় দায়িত্বরত ৬ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শহীদ হন এবং ৮ জন শান্তিরক্ষী আহত হন।

নিহত সবুজের স্বজনেরা জানান, সবুজের বয়স যখন দুই বছর তখন তার বাবা মারা যান। তারা এক ভাই এক বোন। বোন বড়। বাবার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে যখন টানাপোড়েন চলছিল, তখন সবুজ অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ঠিক এসময় গ্রাম সম্পর্কিত এক মামা ২০১০ সালে সবুজকে সেনাবাহিনীতে অসামরিক (লন্ড্রি) পদে চাকরি নিয়ে দেন। তখন ওর বয়স মাত্র ১৩ বছর। তখন থেকেই চাকরি করছিল সবুজ।

সবুজের চাচাতো ভাই ফিরোজ মিয়া বলেন, “সবুজ ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যুতে পরিবারের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।” তিনি আরও যোগ করেন, “দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবুজ ছোট। আজ থেকে প্রায় ১৭ মাস আগে সবুজ নুপুর আক্তার নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। তাদের সন্তান নেই। সবুজ ১৯৯৭ সালের ১ মে জন্ম গ্রহণ করেন।”

সবুজের মা ছকিনা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, “আমার ছেলের বয়স যখন দুই বছর, তখন আমি আমার স্বামীকে হারাই। অভাবের সংসারে অনেক কষ্ট করে দুই সন্তানকে বড় করি। অভাবের কারণে ছোট বেলাতেই সে সেনাবাহিনীতে চাকরিতে প্রবেশ করে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আমি নি:স্ব হয়ে গেলাম। এখন আমার ও তার স্ত্রীর দায়িত্ব কে নেবে?”

স্ত্রী নুপুর আক্তার বলেন, “মাত্র দেড় বছর আগে বিয়ে হয় আমাদের। সংসারের মায়া-মমতা শুরুর আগেই আমি আমার স্বামীকে হারালাম। আমি সরকারের প্রতি আবেদন জানাই, যাতে দ্রুত আমার স্বামীর লাশ দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করে।”

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ জানান, নিহতের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত এ বিষয়ে আমাদের তেমন কিছু করার নেই। সরকার এবং সেনাবাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। আশাকরি, দ্রুতই লাশ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad