Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৯-৭-২০২৫, সময়ঃ সকাল ০৯:৪৫

সুন্দরগঞ্জে ভাঙছে ২০০ মিটার, পাউবো জিও ব্যাগ ফেলছে ৩৯ মিটারে

সুন্দরগঞ্জে ভাঙছে ২০০ মিটার, পাউবো জিও ব্যাগ ফেলছে ৩৯ মিটারে

তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ►

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন চরে তীব্র ভাঙন দেখা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলার কাপাসিয়ার লালচামার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ৩৯ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলছে। অথচ ভাঙছে ২০০ মিটার এলাকা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই জিও ব্যাগ ও জিও টিউব কোন কাজে আসছে না। ইতোমধ্যে কাপাসিয়া ইউনিয়নের ১০০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। সেই সাথে ২০০ পরিবার ও হাজার একর ফসলি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লাল চামার গ্রামের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভাঙনের মুখে পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর হতে অন্য চরে যাওয়া আসা করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। সরকারি ভাবে শুধূমাত্র ভাঙন কবলিত পরিবাগুলাকে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা , হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর তিস্তায় পানি বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় নদী ভাঙন। চলতে থাকে বছর ব্যাপী।  নদী পাড়ের মানুষের দাবি, স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ দিনেও স্থায়ী ভাবে নদী ভাঙন রোধ, ড্রেজিং, নদী খনন, ও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করেনি সরকার। যার কারনে প্রতি বছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, হাজারও একর ফসলি জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। সরকার কোটি টাকা খরচ করে ব্লক, জিও ব্যাগ এবং জিও টিউব ফেলেও ভাঙন ঠেকাতে পারছে না।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটি কাপাশিয়া লালচামার গ্রামের ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩৯ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলছে। কিন্তু ওই এলাকায় প্রায় ২০০মিটার জুরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তার দাবি ৩৯ মিটারে জিও ব্যাগ ফেলে কোন কাজ হবে না। ভাঙন ঠেকাতে গেছে গোটা ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। 

হরিপুর লখিয়ার পাড়া গ্রামের সোলেমান মিয়া মিয়া বলেন প্রতিবছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদী জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। একজন চরবাসিকে মৌসুমে কমপক্ষে ৪ বার ঘরবাড়ি সরাতে হচ্ছে। কিন্তু আজও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধের কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না। 

কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া বলেন, তার ইউনিয়নের উত্তর লালচামার গ্রামে তিস্তার তীব্র ভাঙনে ১০০টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। স্কুল, মসজিদসহ ভাঙনের মুখে শতাধিক পরিবার তাদের বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।

হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলামের দাবি নদী খনন, ড্রেজিং, স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে কল্পে বহুবার চাহিদা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আজও কোন ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ হতে নেয়া হয়নি। শুধুমাত্র ভাঙন রোধে প্রাথমিক ভাবে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। স্থায়ী ভাবে ভাঙন ঠেকানো না হলে চরবাসির দুঃখ কোন দিনও দুর হবে না। ভাঙনে প্রতিবছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি এবং হাজারও একর ফসলি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি শুধুমাত্র শুকনা ভাবার দেয়া হয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। 

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ সরকারের উপর মহলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad