মাধুকর ডেস্ক ►
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনের খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০১৮ সালের সীমানা অপরিবর্তিত রাখায় এবং নতুন কয়েকটি প্রশাসনিক সীমানা যুক্ত হওয়ায় খসড়ায় মাত্র ছয়টি আসনে পরিবর্তন এসেছে। অথচ নির্বাচন কমিশন এর আগে ৫০ থেকে ৬০টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছিলো।
রোববার এ খসড়া প্রকাশ করা হয়। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বারিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। ১৯ মার্চ পর্যন্ত দাবি আপত্তি করার সময় দেওয়া হয়েছে।
সংুব্ধ ব্যক্তিদের আবেদন পাওয়ার পর দাবি, আপত্তি, সুপারিশ ও মতামত নিয়ে শুনানি করার পর চূড়ান্ত সীমানা পুনর্নিধারণ করার বিধান রয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, নতুন সিটি করপোরেশন হওয়ায় ময়মনসিংহ-৪ আসন, নতুন প্রশাসনিক এলাকা হওয়ায় মাদারীপুর-৩, সুনামগঞ্জ-১, সিলেট-১, সিলেট-৩, কক্সবাজার-৩ এবং সুনামগঞ্জ-৩ আসনের পরিবর্তন প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, আবেদনের পর শুনানিতে বক্তব্য যৌক্তিক হলে মেনে নেবো। যাই হোক না কেন, জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করবো। তিনি জানান, ২০১৮ সালে যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটাই অুণ্ন রয়েছে। শুধু প্রশাসনিক কারণে নামের পরিবর্তন হয়েছে অথবা প্রশাসনিক বিভক্তি যেগুলো হয়েছে, সেগুলো পুরনো নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম দিয়ে করা হয়েছে। কোনো পরিবর্তন নেই। সম্ভবত পাঁচ-ছয়টা এ ধরনের হতে পারে। কমিশন অনুমোদন করেছে।
জানা যায়, পাঁচ পদ্ধতি অনুসরণ করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো- প্রতি জেলার ২০১৮ সালের মোট আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা; প্রশাসনিক ইউনিট বিশেষ করে উপজেলা ও সিটি ওয়ার্ড যথাসম্ভব অখ- রাখা; ইউনিয়ন, পৌর ওয়ার্ড একাধিক সংসদীয় আসনের বিভাজন না করা; নতুন প্রশাসনিক এলাকার যুক্ত, সম্প্রসারণ বা বিলুপ্ত হলে তা অন্তর্ভুক্ত করা এবং ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় রাখা।
গত বছরের ২৭ জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ষষ্ঠ জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার বলে জানানো হয়। জনশুমারি চূড়ান্ত হতে আরও সময় লাগবে। এ কারণে প্রশাসিনক ও ভৌগলিক অখ-তা এেেত্র অগ্রাধিকার পেয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, পরিসংখ্যান ব্যুরোর জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে আরও বছরখানেক লাগবে। কিন্তু ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন। তাই আমরা অপো করতে পারছি না। তারা খসড়া যেটা দিয়েছে সেটা আমলে নিয়েছি। তবে প্রশাসনিক অখ-তা এবং ভৌগলিক বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এটা প্রকাশের পর যদি জনপ্রতিনিধি বা স্থানীয়রা সমস্যা মনে করেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা আবেদন করতে পারবেন। এরই মধ্যে যেসব আবেদন পড়েছে, বেশিরভাগই পরিবর্তন না করার জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানান মো. আলমগীর।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি আবেদনেরই শুনানি করা হবে। তাদের বক্তব্য যদি সঠিক হয়, কেউ যদি বিরোধিতা না করেন এবং যদি প্রতীয়মান হয় যে তাদের বক্তব্য যৌক্তিক, তখন হয়তো পরিবর্তন আনা হতে পারে। এছাড়া কোনো পরিবর্তন হবে না।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, জনশুমারি খসড়া তথ্য নেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসনিক ও ভৌগলিক অখ-তা বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। আইনেও তা-ই বলা হয়েছে। আগে একটা উপজেলা ছিলো, এখন দুইটা উপজেলা হয়েছে, এসব ক্ষেত্রে আমরা নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করেছি। আর কোনো পরিবর্তন আনিনি। যে কেউ এেেত্র সীমানা পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন।