জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা►
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপাশেন থিয়েটারে গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের খামার পবনতাইড় গ্রামের আনিছুর রহমান এর স্ত্রী মারুফা বেগমের প্রথম কন্যা সন্তান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডেলিভারি করা হয়েছে।
ওই প্রসূতি মারুফা বেগম ও নবজাতব কন্যা সন্তান উভয়েই বর্তমানে সুস্থ্ আছে। এ সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যদিয়ে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালু হয়। পরে হাসপাতালটি ২০১২ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত চলছিলো। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে প্রসূতি স্বাস্থ্য সেবায় জনবল সংকট থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন চালু ছিল না। গাইনি ডাক্তার থাকলেও অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলোনা। সমন্বয় আর ব্যবস্থাপনার অভাবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এতদিনে অপারেশন থিয়েটার অচল পড়েছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন এক বছর আগে উপনির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরেই তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল সংকট সমাধান সহ সম্প্রতি অপারেশন থিয়েটারটি চালুর পদক্ষেপ গ্রহন করেন।
স্থানীয়রা জানান, কোন প্রসূতি মায়ের সিজারের প্রয়োজন হলে আগে জেলা শহর গাইবান্ধা ও বগুড়া যাওয়া ছাড়া বিকল্প উপায় ছিল না। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ব্যবস্থা চালু করায় কোনো প্রকার হয়রানী ও ঝামেলা ছাড়াই সিজারিয়ান সেবা পাওয়া যাবে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম অস্ত্রোপচারে জন্ম নেয়া শিশুটির বাবা আনিছুর রহমান বলেন, স্ত্রীর সিজার নিয়ে প্রথমে কিছুটা ভয়ে ছিলাম, কারণ এটি হাসপাতালে প্রথম সিজার । সুষ্ঠুভাবে সিজার সম্পন্ন হওয়ায় হয়রানীর হাত থেকে রক্ষাসহ ও আর্থিক ভাবে উপকৃত হয়েছি। অন্য কোথায়ও সিজার করলে হয়রানীর পাশাপাশি ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হতো। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফ্রি সেবা পেয়ে ভালো লাগছে। এমন কাজের পুরো কৃতিত্বই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেশাত রুম্মানসহ সংল্লিষ্ট সকল ডাক্তার নার্সদের।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসক ও নানা সরঞ্জামাদির অভাবে সিজারিয়ান অপারেশন চালু ছিলো না। সংসদ সদস্যের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সংকট কাটিয়ে আমরা সিজারিয়ান অপারেশন চালু করতে সক্ষম হয়েছি। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৪১ বছর পর প্রথম সিজারে আমরা সফল হয়েছি। এ সফলতায় হাসপাতালের সব ডাক্তার ও নার্সরা সহযোগিতা করেছেন। তিনি আরও বলেন, অপারেশন থিয়েটার থেকে প্রসূতিসহ নবজাতককে হাসপাতালের কেবিনে রাখা হয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এখানেই প্রসূতি এবং নবজাতককে সেবা দেয়া হচ্ছে। এখন থেকে এই ব্যবস্থা চালু থাকবে। এতে গ্রাম এলাকার প্রসূতিরা বিনা খরচে সহজ সেবা পাবে।