• মাধুকর প্রতিনিধি
  • ১৩ ঘন্টা আগে

৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাসের পথে বাংলাদেশ



মাধুকর ডেস্ক►

প্রথমে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে বিধ্বস্ত, এবার বাংলার বাঘিনীরা হারাল ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারকে। আর তাতে প্রথমবার এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার পথে এক পা দিয়ে রাখল বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।

বুধবার (২ জুলাই) ইয়াঙ্গুনের থুয়ান্না স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। জোড়া গোল করে লাল সবুজদের জয়ের নায়ক ঋতুপর্ণা চাকমা।

এই জয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে জায়গা অনেকটা নিশ্চিত করে ফেললো বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে বড় জয় নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ওঠার পাশাপাশি গোল ব্যবধানেও অনেকটা এগিয়ে গেল লাল-সবুজের দল। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ড্র করলেও এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। তবে হেরে গেলেও সুযোগ থাকবে। সেক্ষেত্রে মিয়ানমার-বাহরাইন ম্যাচের দিকে চোখ রাখতে হবে ঋতুপর্ণাদের।

এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে এর আগে কখনো না জিততে পারলেও এবার বাহরাইনকে ৭-০ গোলে হারিয়ে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। র‌্যাঙ্কিংয়ের ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা দলকে এভাবে বিধ্বস্ত করে পিটার বাটলারের অধীনে এক নতুন যুগেরই বার্তা দিচ্ছিল বাঘিনীরা। তবে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা, যারাও কি না তুর্কমেনিস্তানকে ৮-০ গোলে হারিয়ে আসর শুরু করেছে, তার উপর স্বাগতিক; সে মিয়ানমারের বিপক্ষে জয়ের চিন্তাটাও ছিল দুঃসাহসিক। সেটাই করে দেখালো ঋতুপর্ণা-আফঈদারা।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বাংলাদেশের ভাগ্য খোলে ১৯তম মিনিটের ফ্রি-কিকে। ঋতুপর্ণার ফ্রি-কিক প্রথমে মিয়ানমারের রক্ষণ দেয়ালে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে ঋতুপর্ণা জোরালো কোনাকুনির শট নেন। মায়ানমারের রক্ষণ ও গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল জড়ায় জালে। প্রথমার্ধে ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের একটি আক্রমণ ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বল মিয়ানমারের ফরোয়ার্ডের পায়েই পড়েছিল। সেই বলও জালে পাঠাতে পারেননি স্বাগতিক দলের ফুটবলার।

প্রথমার্ধের শেষদিকে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা দুইবার গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। তবে মিয়ানমারের ফরোয়ার্ডদের ফিনিশিং দুর্বলতায় বড় কোনো বিপদ ঘটেনি। এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

পিছিয়ে থেকে মাঠে নেমে দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে মিয়ানমার। তবে ৭১ মিনিটে উল্টো গোল হজম করে বসে তারা। প্রতিপক্ষের পাস কেড়ে নিয়ে বাঁ প্রান্তের ডি-বক্স লাইন থেকে দারুণ এক ক্রসে মিয়ানমারের গোলরক্ষককে পরাস্ত করে জাল খুঁজে নেন ঋতুপর্ণা। তাতে জয়ের  শক্ত ভিত গড়ে নেয় বাংলাদেশ। তবে ৮৯তম মিনিটে গোল করে লাল সবুজদের কিছুটা চাপে ফেলে স্বাগতিকরা। ডান প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে বক্সে পাস দেন স্যান থ থ, গোলমুখে নিঁখুত শটে জাল খুঁজে নেন উইন উইন। এরপর যোগ করা সময়ে সমতায় ফিরতে মরিয়ে হয়ে উঠে স্বাগতিকরা। তবে তাদের একের পর এক আক্রমণ ব্যর্থ করে জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ।

দুই ম্যাচের দুটিতে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দুর্বল তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে হার এড়ালেই এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেবে বাংলার বাঘিনীরা। ৫ জুলাই একই মাঠে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ লাল সবুজদের।

অস্ট্রেলিয়ায় আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এএফসি নারী এশিয়ান কাপে অংশ নেবে মোট ১২ দল। ইতোমধ্যে আয়োজকসহ চার দল নিশ্চিত। বাকি বাছাইপর্বের ৮ গ্রুপ থেকে ৮ দল চ্যাম্পিয়ন দল জায়গা করে নেবে মূলপর্বে।