- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ২৮-৭-২০২৫, সময়ঃ সকাল ১১:৫৬
পানি সংকটে পাট জাগ দিতে পারছেন না সুন্দরগঞ্জের কৃষকেরা
তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ►
“বাড়ির আশপাশ নিচু জলাশয়, পুকুর, ডোবা, নালায় নেই পানি। সে কারণে তোষাপাট পঁচানোর জন্য জাগ দেয়া সম্ভাব হচ্ছে না। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে খেতে পড়ে আছে তোষাপাট। রোদে পুড়ে যাচ্ছে তোষাপাটের আটি। এ অবস্থা চলতে থাকলে সোনালী আঁশ, যেন গলার ফাঁস হয়ে যাবে। সেচ মটার বা শ্যালোমেশিন দিয়ে জলাশয়ে পানি ভরাট করে তোষাপাট জাগ দিয়ে কোনো লাভ হবে না, যদি ভারী বৃষ্টি না হয়।”
কথাগুলো বলছিলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের বজড়াকঞ্চিবাড়ি গ্রামের পাট চাষী আব্দুল মতিন মিয়া। তিনি চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে তোষাপাট চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে একবিঘা জমির তোষাপাট কেঁটে ফেলেছেন। কিন্তু পানির অভাবে জাগ দিতে পারছেন না।
একই দাবি করে চন্ডিপুর ইউনিয়নের নুরুল মিয়া বলেন, কম পানিতে তোষাপাট জাগ দিলে পাটের রং ভাল হবে না। বাজার দর অনেক কম হবে। এসব কারণে পাট চাষীদের লোকসান গুণতে হবে।
গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার পনেরটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ওপর দিয়ে হালকা বৃষ্টি পাত হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। বিশেষ করে আমন চাষাবাদ অনেকটা পিছে পাচ্ছে। যেসব কৃষকের বীজতলায় চারার বয়স হয়ে গেছে, তারা সেচের মাধ্যেমে আমন চারা রোপন শুরু করেছেন। এতে করে চাষাবাদ খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে নিচু জলাশয় সমূহে পানি না থাকায় তোষাপাট চাষীরা পাট জাগ দিতে পারছে না।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার পনেরটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে তোষাপাট চাষাবাদ হয়েছে। সেই সাথে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৩০ হাজার ৮৫ হেক্টর। বৈরী আবহাওয়া এ অবস্থায় চলতে থাকলে চাষাবাদ ব্যাহত হতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাশিদুল কবির বলেন, এটি প্রাকৃতিক দুর্য়োগ। এখানে আসলে মানুষের কোনো হাত নেই। তবে অনেকে সেচের মাধ্যমে পুকুর, ডোবা, নালা এবং নিচু জলাশয়ে পানি ভরাট করে তোষাপাট জাগ দিচ্ছে। সেই সাথে অনেক কৃষক সেচের মাধ্যমে আমন চারা রোপন শুরু করেছে। কম পানিতে তোষাপাটের রং একটু খারাপ হতে পারে। এতে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমন চাষাবাদের সময় এখনো পার হয়নি। আরও ১০ হতে ১৫ দিন পরে চারা রোপন করলে কোনো ক্ষতি হবে না।