• মাধুকর প্রতিনিধি
  • ৪ ঘন্টা আগে

৫০ শয্যার অর্ধেক জনবলেই চলছে ২৫০ শয্যার গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল!



নিজস্ব প্রতিবেদক►

জনবল ও ওষুধ সংকট এবং চরম অব্যবস্থাপনায় নাকাল গাইবান্ধার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। মাত্র ৫০ শয্যার জনবল ও অবকাঠামো দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এ বৃহৎ হাসপাতালটি, ফলে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে দুর্ভোগে পড়ছেন জেলার সাত উপজেলার মানুষ।

হাসপাতালজুড়ে নোংরা পরিবেশ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের অনুপস্থিতি, ওষুধ না দেয়া এবং ভর্তি রোগীদের অযত্নের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অথচ প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী আউটডোর এবং প্রায় ৩০০ রোগী ইনডোর বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, সকাল থেকে বেলা গড়িয়ে দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করলেও চিকিৎসকরা নিয়মিত না আসা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না পাওয়ায় বেলা শেষে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তাদের। শুধু তাই নয় সরকারিভাবে সরবরাহ তালিকায় ওষুধ থাকলেও তা দেয়া হচ্ছে না। কিনতে হচ্ছে দোকান থেকে। পাশাপাশি চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে স্লিপের মাধ্যমে যে পরিমাণ ওষুধ লিখে দেন, কাউন্টারে স্লিপ জমা নিলেও সে পরিমাণ ওষুধ দেয়া হয় না।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘসময় লাইন ধরে টিকিট পেলেও চিকিৎসক না আসায় বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।  টাকা না থাকায় অন্য কোথাও ডাক্তার দেখাতে পারবেন কি না সেটাও জানি না।’

ভর্তি রোগীদেরও একই অবস্থা। প্রয়োজনীয় ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে, পর্যাপ্ত বেড না থাকায় বারান্দায় গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে।

পলাশবাড়ীর লাবনী বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দুই দিন ধরে আমার চাচি হাসপাতালে ভর্তি। জরুরি বিভাগে একবার দেখেছে, এরপর আর কোনো চিকিৎসক আসেননি। ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি।’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আসিফ রহমান বলেন, ‘এই হাসপাতাল চালানো হচ্ছে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে এবং ৫০ শয্যার যে চিকিৎসক ও জনবল থাকার কথা সেখানে আছে তারও অর্ধেক। এতে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে যাচ্ছি।’

স্বাস্থ্যখাতের এমন করুণ অবস্থা দেখে ক্ষোভ জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা। অবিলম্বে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের জনবল, অবকাঠামো এবং ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।