• মাধুকর প্রতিনিধি
  • এই মাত্র

গাইবান্ধায় এসএসসি শিক্ষাবৃত্তি ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা



নিজস্ব প্রতিবেদক►

বাবার পুরোনো সাইকেলেই কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এসেছিল এক শিক্ষার্থী। কারও চোখে ছিল ভবিষ্যতের স্বপ্ন, কারও মুখে গর্বের হাসি। আবার কেউ বলল, “আজকের এই বৃত্তি আমাদের জীবনে আশীর্বাদের মতো।” 

গাইবান্ধার কৃতি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃহস্পতিবারের (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলটা তাই হয়ে উঠেছিল এক অন্যরকম আনন্দের দিন।

‘আলো ছড়াক মেধা, স্বপ্ন গড়ুক সাহস’ এই স্লোগান নিয়ে এদিন গাইবান্ধা সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এসএসসি শিক্ষা বৃত্তি ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের দেওয়া হলো সংবর্ধনা। অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তি, ক্রেস্ট, সনদপত্র ও উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের আয়োজনে ও পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল সু-প্যালেস, সৃজনশীল গাইবান্ধা, ফ্যাশন প্যালেস ও বই ঘর পাঠাগার। 

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন গাইবান্ধা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর খলিলুর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন সু-প্যালেস ও ফ্যাশন প্যালেসের স্বত্বাধিকারী এবং গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক আবুল হোসেন সোহাগ মৃধা।

বক্তব্য দেন গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুলতান মাহমুদ, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মাসুদুর রহমান, দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আনিছা আখতার বেগম চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক এ.বি.এম জিল্লুর রহমান, প্রথম আলোর প্রতিনিধি শাহাবুল শাহীন তোতা, ফোকাস বাংলার ফটোগ্রাফার কুদ্দুস আলম, সৃজনশীল গাইবান্ধার ফাহাদ রাব্বী প্রমুখ । অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সৃজনশীল গাইবান্ধা ও বই ঘর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ মেহেদী হাসান।

কৃতি শিক্ষার্থী মিলন মিয়া জানায়, “আজকের এই সংবর্ধনা আমাদের জন্য শুধু আনন্দ নয়, বরং প্রেরণার উৎস। আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, ভবিষ্যতে আরও ভালো ফল করে দেশকে গর্বিত করব।”

এক অভিভাবক জানান, “আমরা গরীব হলেও আজকের এই বৃত্তি আমাদের সন্তানদের শিক্ষার পথে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।” 

বক্তারা বলেন, অর্থের অভাব শিক্ষার পথে বাধা নয়। চেষ্টা থাকলে সমাজের কেউ না কেউ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। তারা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান।

সু-প্যালেসের স্বত্বাধিকারী আবুল হোসেন সোহাগ মৃধা বলেন, “আমরা চাই, গাইবান্ধার কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী যেন অভাবের কারণে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়। তাই এবার দ্বিতীয়বারের মতো জিপিএ-৫ প্রাপ্ত গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হলো। ভবিষ্যতেও এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।”

সৃজনশীল গাইবান্ধা ও বই ঘর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী যেন অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে। আজকের সংবর্ধনা সেই উদ্যোগের ধারাবাহিকতা। শিক্ষার্থীরা শুধু ভালো ফলই করবে না, বরং সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবেও গড়ে উঠবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

প্রতিবছরের মতো এবারও জেলার অচ্ছল, সুবিধাবঞ্চিত, প্রান্তিক ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়। জেলার সাতটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নির্বাচিত ৫০ জন শিক্ষার্থীকে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট, সনদপত্র ও উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।