• মাধুকর প্রতিনিধি
  • ৫৫ মিনিট আগে

নাগরিক কবি শামসুর রাহমানের জন্মদিন আজ



মাধুকর ডেস্ক►

আজ ২৩ অক্টোবর। বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান কবি শামসুর রাহমানের ৯৭তম জন্মদিন। ১৯২৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার মাহুতটুলীর নানাবাড়িতে জন্ম নেন তিনি। ডাকনাম ‘বাচ্চু’। বাংলা কবিতার আকাশে দীপ্তিমান এ নক্ষত্র মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী গণজাগরণের প্রতিটি স্তরে আলো ছড়িয়েছেন।

নাগরিক কবিখ্যাত শামসুর রাহমানের শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতি ধরে রেখেছে পুরান ঢাকার অলিগলি। সেখানকার ঘোড়ার গাড়ির আওয়াজ, ট্রাফিক সিগন্যাল ও ধোঁয়াটে রেস্তোরাঁর গন্ধ– সবই তাঁর কবিতার উপজীব্য। চিত্রকল্পে এগুলো আলোর দ্যুতির মতো ফুটে উঠেছে। নগর জীবনের ক্লান্তি, নিঃসঙ্গতা, ব্যস্ততা ও ব্যর্থতা– সবই তাঁর কবিতার অন্তর্নিহিত। তিনি মানুষের আবেগকে চিত্রিত করেছেন পরম যত্নে। প্রেমের পাশাপাশি দ্রোহও তাঁর কবিতার অন্যতম দিক।

১৯৪৮ সালে ১৯ বছর বয়সে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশ হয়। বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় ‘রূপালি স্নান’ কবিতার মাধ্যমে সাহিত্যজগতে তিনি আসন পোক্ত করেন। ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতার বই–‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’। বইটি বাংলা আধুনিক কবিতায় নতুন দিগন্তকে উন্মোচন করে। আত্মমগ্নতা, প্রেম, স্মৃতিচারণ, স্বপ্ন ও অন্তর্দ্বন্দ্বে ভরপুর এসব কবিতা সময়ের নাগরিক চেতনাকে সামনে এনে দিয়েছিল।

তবে শামসুর রাহমান কেবল স্বপ্নবাজই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সময়ের দায়বদ্ধ সৈনিক। তাঁর কবিতা ধীরে ধীরে রোমান্টিক আবেশ থেকে বাস্তববাদী বোধের দিকে সরে আসে। ‘রৌদ্র করোটিতে’, ‘বিধ্বস্ত নীলিমা’, ‘নিরালোকে দিব্যরথ’–এসব গ্রন্থে তিনি নগরের শোষণ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক অবিচারের ব্যথা প্রকাশ করেন। তাঁর কবিতায় ধ্বনিত হয় মধ্যবিত্ত সমাজের টানাপোড়েন, সংগ্রামের আর্তনাদ ও ইতিহাসের লড়াই।

২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।