• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৯-১০-২০২২, সময়ঃ সকাল ১১:৪৯

ত্রিমোহনীতে সহায় সম্বলহীন ২৫০টি পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর ঘর



নিজস্ব প্রতিবেদক ►

 গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ত্রিমোহনী এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে গুচ্ছ গ্রামে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ তৃতীয় বারের মত এককালীন সেমিপাকা ঘর পেল সহায় সম্বলহীন হিন্দু-মুসলিম উভয় ধর্মের ২শ ৫০টি নতুন পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে এককালীন আশ্রয় পাওয়ায় খুশী উপকারভোগীরা।

"আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার" এই ল্যকে সামনে রেখে মুজিব শতবর্ষ উপলে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধিনে তৃতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে গরীব, অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ২শ ৫০ জন নারী-পুরুষ পেয়েছে সেমিপাকা ঘর। স্বামী স্ত্রী উভয়েই এই ঘরের মালিকানার অংশিদার।

সরেজমিনে বোয়ালী ইউনিয়নের ত্রিমোহনী এলাকায় গুচ্ছ গ্রামে যেয়ে উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়- এই ঘর পাওয়ার আগে জায়গাজমি না থাকায় তারা অনেক কষ্টের মধ্যে ছিল। বর্তমানে তারা অনেক খুশী ও আনন্দিত। এর আগে তারা কেউ ভাড়া বাসায় ছিল, আবার কেউ শ্বশুরবাড়িতে থাকত। এদের মধ্যে পুরুষরা পেশায় কেউ রিক্সা-ভ্যান চালক, কেউ বা ভ্রাম্যমাণ ভুচকা ব্যবসায়ী, কেউ মানুষের জমিতে কৃষাণ এর কাজ করে। আবার মহিলাদের মধ্যে কেউ মানুষের বাসায় কাজ করেন। ঘর পাওয়ায় বর্তমানে তাদের বাসা ভাড়ার টাকা সেফ হবে।


উপকারভোগী শ্রীমতি আরতী দাস বলেন- আমার স্বামী সন্তান, জায়গা জমি কিছুই নেই। আমি মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে খাই। স্বামী মারা গেছে। আর এক ছেলে সেও বাড়ীঘর না থাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকে। বর্তমানে আমি একা। আমি আগে ভাড়া বাসায় ছিলাম খুব কষ্টে ছিলাম।  বাসাটি পেয়ে আমার খুব ভাল লাগছে। আমি এখন খুব ভাল আছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের মাতা। মাতা জন্যই আমাদের সন্তানদের কথা চিন্তা করে আমাদেরকে যে ঘর দিয়েছে সে জন্য আমি তাকে কোটি কোটি প্রনাম জানাই। আমি তার সুস্থতা কামনা করি। সে সাথে টিএনও মহোদয়কেও ধন্যবাদ আমাকে ঘর পাইয়ে দেবার জন্য। সেও খুব ভাল।

সৈকত মিয়া জানান, আমি একজন ভ্রাম্যমাণ ভুচকা ব্যবসায়ী। আমাদের কোনো জমি জমা নাই। আগে আমরা অন্যের বাসায় ছিলাম। এখন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে আগের থেকে ভাল আছি। এখন নিজের বাসা হওয়ায় স্বাধীন মত চলতে পারছি। মুজিব শতবর্ষ উপলে ইউএনও স্যারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর পেয়েছি। এ জন্য আমি দুইজনকেই ধন্যবাদ জানাই।
মোছা: লেবু আক্তার জানান, আমার স্বামী রবিন একজন চাষা। আগে আমরা বোনারপাড়ায় ভাড়া ছিলাম। আমাদের কোনো জমি জমা নাই। শেখ হাসিনা আন্টির দেয়া ঘর পেয়ে এখন আমরা খুশী। আগের থেকে অনেক শান্তিতে আছি। তবে একটাই অনুরোধ রাস্তাটি করে দেক, পানির জন্য ড্রেন করে দেক ও ময়লা ফেলার ডাষ্টবিন করে দেক।

অপর উপকারভোগী চাষাবাদ শাহজাহান জানান, আগে আমরা বড় কালিবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় ছিলাম। আমার বাপ দাদার যে জমি ভিটে ছিল। তা তারা বেচে খেয়ে শেষ করেছে। বাসাটি পেয়ে আগের থেকে একটু ভাল লাগছে। তবে একটু অসুবিধা রাস্তা ঠিক নাই, নিরাপত্তার জন্য রোড লাইটের দরকার। আর কলের পানি আটকে থাকে তার জন্য ড্রেনের দরকার।

উপকারভোগী প্রতিবন্ধি আইরিন ও তার স্বামী জানান, জাফর একজন ভ্যান চালক। মানুষের ভ্যান ভাড়া নিয়ে চালিয়ে টাকা কামাই করে। তারা আগে সদরের ফলিয়াতে আইরিন এর বাবার বাড়ি ছিল। এখন প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি পেয়ে তারা খুশী। তবে বিদ্যুৎ এর মিটার না পাওয়ায় তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফুল আলম জানান, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ত্রিমোহনী এলাকায় তাদের ক্রয়কৃত জমিতে ২শ ৫০টি ঘর নির্মান করা হয়েছে। এতে ২শ ৫০টি পরিবারকে বিদ্যুৎ ও পানির সুবিধাসহ জমির কাগজ হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাস্তা, ড্রেনসহ যেসব কাজ অসমাপ্ত রয়েছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে বরাদ্দপ্রাপ্তি সাপেে প্রকল্পের অধীনে কাজ করা হবে। উল্লেখ্য, এর আগেও কয়েক দফায় ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।