• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১-৪-২০২৪, সময়ঃ বিকাল ০৫:০৪

শিশুকে নিয়ে ট্রেনে আত্মহত্যা করছিলেন মা, বাঁচাতে গিয়ে কলেজ ছাত্রসহ নিহত ২



নিজস্ব প্রতিবেদক

দাম্পত্য কলহের জেরে শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন রাজিয়া বেগম নামে এক গৃহবধু। দেখতে পেয়ে তাদের বাঁচাতে এগিয়ে যায় জোবায়ের রহমান (জামিল) নামে এক কলেজ ছাত্র। কিন্তু আবির নামে শিশু ছেলেটি প্রাণে বেঁচে গেলেও ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ যায় রাজিয়া ও জোবায়েরের।

সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে গাইবান্ধা শহরের মাঝিপাড়া এলাকার রেললাইনে ঘটে এ দুর্ঘটনা।

নিহত রাজিয়া বেগম মাঝিপাড়া এলাকার রিকশাচালক আনোয়ার মিয়ার স্ত্রী। আর জোবায়ের জেলার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে। সে গাইবান্ধার এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্কের পর সুনামগঞ্জ থেকে গাইবান্ধায় এসে আনোয়ার হোসনকে বিয়ে করেন রাজিয়া খাতুন। প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হওয়ায় রাজিয়ার বাড়ি থেকে কেউ গাইবান্ধায় আসতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী আনোয়ার। রোববারও তাকে শারীরিক নির্যাতন করে রাতভর দেড় বছরের শিশু সন্তানসহ ঘরে উঠতে দেয়নি তার স্বামী আনোয়ার।

এতে মনের ক্ষোভে সোমবার সকালে বাড়ির পাশে রেললাইনে ছেলে আবিরকে নিয়ে আত্মহত্যার জন্য লাইনে দাঁড়ান তিনি। এ সময় কলেজছাত্র জোবায়ের রহমান জামিল তাদের দেখতে পেয়ে বাচাঁনোর চেষ্টা করেন। লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় রাজিয়ার সাথে তার ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে শিশুটিকে লাইনের পাশে ছুড়ে ফেলতে পারলেও এর মধ্যেই দোলনচাঁপা ট্রেনের ধাক্কায় লাইন থেকে ছিটকে পড়েন দুজনই।

স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় শিশুসহ তিনজনকে গাইবান্ধার সদর হাসপাতালে নিলে তাদের দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নেয়ার পথে দুজনের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোনারপাড়া (গাইবান্ধা) রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, শিশুসহ গৃহবধূকে বাঁচাতে গিয়ে কলেজছাত্রসহ দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে। ওই নারীর কোলে থাকা শিশুটি ছিটকে পড়ে যায়। আহত শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য রংপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।